পাকিস্তানকে সব রকম সাহায্যই বন্ধ করার হুমকি দিল আমেরিকা। বছরের প্রথম দিনে ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইট করেছিলেন, ‘‘জঙ্গি দমনের নামে ১৫ বছর ধরে পাকিস্তান আমাদের থেকে ৩৩০০ কোটি ডলার নিয়ে গিয়েছে। বিনিময়ে ঝুড়ি-ঝুড়ি মিথ্যে বলা ও প্রতারণা ছাড়া কিছুই করেনি।’’ দ্বিতীয় দিনে হোয়াইট হাউসের ঘোষণা করেছে, পাকিস্তানকে সামরিক খাতে যে ২৫ কোটি ৫০ লক্ষ ডলার সাহায্য দেওয়ার কথা ছিল, আপাতত তা বন্ধ রাখা হচ্ছে। আর তৃতীয় দিনে রাষ্ট্রপুঞ্জে সাংবাদিক বৈঠক করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি আজ ঘোষণা করলেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদের সমর্থক ও আশ্রয়দাতা পাকিস্তানকে সব রকম সাহায্য বন্ধ করার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বহু দূর যেতে তৈরি।’’ হ্যালির অভিযোগ, বছরের পর বছর আমাদের সঙ্গে দু’মুখো খেলা খেলে আসছে পাকিস্তান। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বরাবর ওরা আমাদের শরিক হিসেবে থেকেছে। একই সঙ্গে আশ্রয় ও সাহায্য জুগিয়ে এসেছে সন্ত্রাসবাদীদের। ওই সন্ত্রাসবাদীরাই আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর উপরে হামলা চালিয়েছে বারবার।
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ নেতা ইমরানের বক্তব্য, ‘‘ট্রাম্প আসলে জানেনই না আফগানিস্তানে ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে, কতটা বলিদান রয়েছে পাকিস্তানের। কত রক্ত ঝরিয়েছে এই দেশ। আসলে পাকিস্তান-বিরোধী কিছু লোক ট্রাম্পকে এ সব বুঝিয়েছেন।’’ পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহসান ইকবালের দাবি, ‘‘বিদ্রুপ না করে আমেরিকার উচিত সন্ত্রাসবাদের হাত থেকে এলাকাকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে পাকিস্তান যে বিপুল আত্মত্যাগ করেছে তার প্রশংসা করা। টুইটারে এ দিন বিদায়ী সরকারের বিদেশমন্ত্রী খাজা আসিফ চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন, ‘‘১৫ বছরে ৩,৩০০ কোটি ডলার সাহায্য দেওয়ার যে দাবি ট্রাম্প করছেন, তা মিথ্যা। কোনও অডিট সংস্থাকে দিয়ে পরীক্ষা করালেই প্রমাণ হয়ে যাবে।’’
পাক শাসক দল পিএমএল(এন) সভাপতি, তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মতে ট্রাম্পের মন্তব্য ‘দুঃখজনক’ । এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে নওয়াজ বলেন, ‘‘৯/১১-র পরে সবচেয়ে বেশি মূল্য দিতে হয়েছে পাকিস্তানকে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের শরিককে দেওয়া অর্থকে আদৌ সাহায্য বা অনুদান বলা চলে না। সাহায্যের মামে বিদ্রুপের কোনও প্রয়োজন নেই আমাদের।’’ সেই সঙ্গে নওয়াজের পরামর্শ, ‘‘প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খকন আব্বাসির এমন কোনও কৌশল বা নীতি নির্ধারণ করা উচিত যাতে মার্কিন সহায়তার উপরে পাকিস্তানের নির্ভরতা শেষ হয়।’’