দুই বছরের দীর্ঘ চেষ্টার পর দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান শুক্রবার সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) পূর্ণ সদস্য পদ পেয়েছে। ইউরোপ ও এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক সংস্থাটি শুক্রবারের শীর্ষ সম্মেলনে ভারত-পাকিস্তানকে সদস্য হিসেবে গ্রহণ করে। ফোরামটিকে সামরিক জোট ন্যাটোর সমপর্যায়ের নিরাপত্তা সংস্থা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। চীনের সমর্থনে পাকিস্তান সংস্থাটির সদস্য হলে রুশ চাপে ভারতকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এসসিও’র সদস্য হিসেবে নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষাসহ সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে জোর দাবি জানাতে পারবে ভারত। কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট নুরসুলতান নাজারবায়েভ বলেন, ভারত-পাকিস্তান এখন থেকে এসসিও’র সদস্য। এটা আমাদের সবার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। পৃথিবীর বৃহৎ জ্বালানি ভোক্তা দেশগুলোর মধ্যে ভারত অন্যতম।
এ ফোরামের সদস্য হওয়ায় ভারত মধ্য এশিয়ার বড় বড় গ্যাস ও জ্বালানি অনুসন্ধান প্রকল্পে অংশ নেয়ার সুযোগ পাবে। এছাড়া এসসিওর বেশকিছু দেশের কাছে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যাপক মজুত আছে। যেটা ভারতকে জ্বালানির সরবাহের ক্ষেত্রে ভাল সুযোগ এনে দিতে পারে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এসসিও’র প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, বিশ্বের লোকসংখ্যার ৪২ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে এ ফোরাম। এছাড়া পৃথিবীর ২২ ভাগ ভূখন্ড- ও ২০ শতাংশ জিডিপিরও মালিক এসসিও দেশগুলো। এসব কারণে আমরাও এসসিও’র সদস্য হতে উৎসাহিত হয়েছি। তিনি বলেন, এ ফোরামের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে ভারতের জ্বালানি, শিক্ষা, পরিবহন, কৃষি, নিরাপত্তা, উন্নয়ন ও বাণিজ্য সুবিধা পাবে।
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সংস্থাটি আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী।’ এসসিও’র সদস্য পদ অর্জনের পর নরেন্দ্র মোদীকে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ অভিনন্দন জানিয়েছেন। ২০০১ সালে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা গঠিত হলে ২০০৫ সাল থেকে ভারত এ সংস্থার পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছে। ভারত-পাকিস্তান বাদেও চীন, কাজাখস্তান, কিরগিস্তান, রাশিয়া, তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তান এসসিও’র সদস্য।