কাগজে কলমে পাকিস্তান আমেরিকার ঘনিষ্ঠ মিত্র। তবে মঙ্গলবার আফগান সঙ্কট নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ভাষায় পাকিস্তানের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন, তার নজির খুব একটা চোখে পড়েনা।
ট্রাম্প খোলাখুলি হুমকি দিয়েছেন, তালেবানকে নিজেদের মাটিতে নিরাপদ আশ্রয় দেয়া বন্ধ করতে হবে পাকিস্তানকে। খবর বিবিসি।
তিনি যদি মনে করেন পাকিস্তান তার কথা শুনছে না, তাহলে আমেরিকা কী করবে – সেটা খোলাসা করেননি মি ট্রাম্প। তবে মুখে তিনি যেটা বলেছেন তা হলো – আমেরিকা আফগানিস্তানে ভারতের অধিকতর ভূমিকা দেখতে চায়। মি ট্রাম্প হয়তো মনে করছেন, ভারতের ভূমিকা নিয়ে এই বক্তব্য পাকিস্তানের ওপর মারাত্মক চাপ তৈরি করবে।
কিন্তু মার্কিন সেনাবাহিনীর সাবেক উপ-প্রধান জেনারেল জ্যাক কিন, যার সাথে বর্তমান আমেরিকান প্রশাসনের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে, তিনি বলেছেন – প্রেসিডেন্ট যেটা মুখে বলেননি তা হলো যদি পাকিস্তান তালেবানের ‘নিরাপদ আশ্রয় শিবিরগুলো’ বন্ধ না করে, তাহলে আমেরিকাকেই সেই দায়িত্ব নিতে হবে।
জেনারেল কিন যেটা ইঙ্গিত করেছেন, তালেবানকে শায়েস্তা করতে পাকিস্তানের ভেতরে সামরিক অভিযান চালাতে পেছপা হবেনা আমেরিকা।
মি ট্রাম্পের এই হুমকির পরদিনই (বুধবার) পাকিস্তানের প্রতি চাপ অব্যাহত রেখেছেন তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। তিনি বলেছেন, আফগানিস্তানে প্রেসিডেন্টের নতুন কৌশলকে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে পাকিস্তানকে।
তা না হলে, মি টিলারসন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে পাকিস্তান যে ‘বিশেষ মর্যাদা’ পেয়ে আসছে তা হারাতে হবে। “পাকিস্তানকে তাদের নিজেদের স্বার্থেই ব্যবস্থা নিতে হবে।”
পাকিস্তান এখনো প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৩০ কোটি ডলারের সামরিক সাহায্য পায় আমেরিকার কাছ থেকে, যদিও তালেবান ইস্যুতে সে সব সাহায্যের অনেকগুলো এখন স্থগিত।
এখন পর্যন্ত পাকিস্তান সরকার আমেরিকার নতুন এই হুমকির ব্যপারে খুব বেশি কথা বলেনি। তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুধু বলেছে – পাকিস্তান তালেবানকে কখনই নিজেদের মাটিতে আশ্রয় দেয়না এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই বক্তব্যকে পাকিস্তান নিন্দা করে।
তবে আমেরিকা, আফগান সরকার এবং পশ্চিমা বিশ্লেষকদের মধ্যে কোনো সন্দেহ নেই যে পাকিস্তান তাদের কৌশলগত স্বার্থে তালেবানকে গোপনে সাহায্য সহযোগিতা করছে ।