বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, পাটকাঠি থেকে অ্যাকটিভেটেড চারকোল উৎপাদন (এক্টিভেটেড চারকোল) বাংলাদেশে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে ।
কৃষকরা পাট উৎপাদন করে আগের চেয়ে বেশী লাভবান হচ্ছে। ফলে দিন দিন পাট চাষ ও উৎপাদনে কৃষক আগ্রহী হচ্ছে। চারকোল উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধিতে সব ধরনের সহায়তা করবে সরকার। পাট থেকে এধরনের যত বেশী বহুমুখী পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব হবে তত দ্রুত সোনালী আশেঁর হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে ।
আজ ১৬ জানুয়ারি ২০১৯ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী অফিস কক্ষে বাংলাদেশ চারকোল ম্যানুফ্যাক্সারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এ একথা বলেন ।
সভায় চারকলের বিষয়ে জানানো হয়, দেশে প্রথম ২০১২ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে পাটকাঠি থেকে অ্যাকটিভেটেড চারকোল (এক্টিভেটেড চারকোল) উৎপাদন শুরু হয়। ওই বছরই সর্বপ্রথম চীনে এ পণ্য রপ্তানী করা হয় । বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চারকলের চাহিদা রয়েছে। দেশে এ পণ্য উৎপাদনের ব্যাপতি বাড়লে আগামীতে জাপান, ব্রাজিল, তুর্কিস্থান, যুক্তরাষ্ট্র, দঃ করিয়া, তাইওয়ান, কানাডা, মেক্সিকোসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চারকল রপ্তানি সম্ভাব হবে ।
বর্তমানে বিদেশে চারকল দিয়ে তৈরী হচ্ছে- ফেস ওয়াস, ফটোকপিয়ারের কালি, পানির ফিল্টার, বিষ ধ্বংসকারী ওষুধ, জীবন রক্ষাকারী ঔষুধ ও দাতঁ পরিষ্কার করার ঔষধ। এছাড়া বিভিন্ন পন্য উৎপাদনে এ কার্বন ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ১০-১২টি চারকল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে । এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলো হল- সানবিম কর্পোরেশন, মাহফুজা এন্ড আহান এন্টারপ্রাইজ, জামালপুর চারকল লিমিটেড ও রিগারো প্রাইভেট লিমিটেড।
বর্তমানে জামালপুর, নারায়নগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলাতে বাণিজ্যিকভাবে চারকল উৎপাদন শুরু হয়েছে ।
চারকোল ম্যানুফ্যাক্সারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চারকলের এ অবারিত সম্ভাবনার কথা উপস্থাপন করা হয় । দেশে প্রতিবছর প্রায় ৩০ লাখ টন পাটকাঠি উৎপাদিত হয় । এর মধ্যে যদি ৫০ ভাগ পাটকাঠি চারকল উৎপাদনে সঠিক ভাবে ব্যবহার করা যায়, তবে প্রতিবছর প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার টন চারকল উৎপাদন সম্ভব হবে। যা বিদেশে রপ্তানী করে প্রতিবছর প্রায় ২ হাজার ৫’শ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে সারা দেশে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা দিন দিন বৃদ্ধি পাবে।
চারকোল ম্যানুফ্যাক্সারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মির্জা জিল্লুর রহমান বলেন, চারকল শিল্পকে একটি উদীয়মান শিল্প হিসাবে ঘোষনা দিতে হবে । পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড় পত্র ও পাটজাত পন্য হিসাবে ২০ ভাগ ক্যাশ ইনসেনন্টিভ পাওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে । এ শিল্প বিকাশে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অর্ন্তভূক্ত বা সহযোগি প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের সুযোগ দিতে হবে। এ শিল্পের জন্য দ্রুত পৃথক নীতিমালা তৈরী করতে হবে । এছাড়া এ শিল্পের জন্য সরকারী ও বেসরকারী সহযোগিতা ও ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে ।
মন্ত্রী এ সকল প্রস্তাব সম্পর্কে বলেন, নতুন এ খাতে যে সকল সমস্যা রয়েছে তা সরকার অবগত আছে । এ সমস্যা দূর করতে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সব ধরনের সহায়তা করবে। এ বিষয়ে খুব শিগরিই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে । চারকল শিল্পের বিকাশের জন্য সকল পক্ষের সার্বিক সহযোগিতা চান বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী ।