পাট খাতের উন্নয়নে কোনো ধরনের দুর্নীতি সহ্য করা হবে না বলে বিজেএমসি কর্মকর্তাদের সাফ জানিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি করেছেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক এমপি।
রোববার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে বিজেএমসি ভবনে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন আয়োজিত বিজেএমসি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং মিলের প্রকল্প প্রধানদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, সুশাসন চাই, ভালো ব্যবস্থাপনা চাই। পাট শিল্পকে ধ্বংস হতে দেয়া যাবে না। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের দুর্নীতি সহ্য করা হবে না। দুর্নীতি থাকলে পাটখাত কোনো দিন উন্নত হবে না। এখাতে দুর্নীতি দূর করার সাথে সাথে সুশাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। তবেই পাট শিল্প টিকে থাকবে। বিজেএমসি’র মিলের ভেতরে কোন মিলের আর্থিক অবস্থা কেমন তা দ্রুত সময়ের মধ্যে আলাদা আলাদা ভাবে উপস্থাপন করতে হবে । কোন মিল লাভে আছে আর কোন মিল লোকসানে আছে সেটা বের করতে হবে। বেসরকারী মিলগুলো লাভে থাকলে সরকারি পাট মিলগুলো কেন লোকসানে আছে সেটা জানতে হবে। চাহিদা নির্ধারণ ও বাজার বিশ্লেষণ করে করে বিজেএমসিকে পণ্য উৎপাদন করতে হবে যাতে পণ্য অবিক্রিত না থাকে । বিজেএমসির মিলগুলোকে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে হবে।
বিজেএমসির চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্যে মন্ত্রী আরও বলেন, বিজেএমসিকে নিজের টাকায় নিজেদের চলতে হবে। বারবার সরকারের কাছে হাত পেতে চলা যাবে না। কতোদিন ধার করে চলবেন। কোথায় কোথায় দুর্নীতি হচ্ছে খুঁজে বের করুন। কারা দুর্নীতিগ্রস্থ চিহ্নিত করুন। প্রয়োজনে শাস্তির আওতায় আনুন। একই সাথে সরকারি পাট মিলে শ্রমিকের সংখ্যা কতো, শ্রমিকরা ওভারটাইম পাচ্ছে কিনা সেটাও খুঁজে বের করুন। প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলো লাভবান হচ্ছে সেখানে সরকারি প্রতিষ্ঠান লোকসান গুনবে, মেনে নেওয়া হবে না।
গোলাম দস্তগীর আরও বলেন, এক সময় বাংলাদেশের পাটের কদর বিশ্বময় ছিলো। বর্তমান সরকার দ্রুত সময়ে সারাবিশ্বে পাটের জয়জয়কার দেখতে চায়। মুক্তিযোদ্ধারা পাটের জন্য যুদ্ধ করেছিলাম। বঙ্গবন্ধুর ৬ দফার মধ্যেও পাটের জন্য দাবি ছিলো। সেই পাটখাত ধ্বংস হতে পারে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পাটকে ভালোবাসেন। তাই পাটের উন্নয়নে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান বলেন, পাট সোনালী আঁশ। পাট বেঁচে থাকলে অর্থনৈতিকভাবে আমরাও বেঁচে থাকবো। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাটকে ষড়যন্ত্র করে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এরপর বর্তমান সরকার এই পাটকে আবার স্বর্ণযুগে নিতে কাজ করছে। এই পাট একদিন আবার রপ্তানিতে এক নাম্বারে থাকবে। স্বাধীনতার সময় ৭৭টি পাটকল ছিলো যা এখন ২৬টিতে এসেছে। আমাদের পাট সারাবিশ্বের চেয়ে ভালো পাট।
মতবিনিময় সভায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো.মিজানুর রহমান, বিজেএমসির চেয়ারম্যান শাহ মোঃ নাছিম, বিজেএমসির ঊর্ধ্ব তন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।