শিল্পোন্নয়নে পা বাড়িয়েই সত্যিটা উপলব্ধি করেছে বাংলাদেশ। বিদ্যুৎ বৃদ্ধিতে মরিয়া। দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতটা পারছেন বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। উৎপাদন কেন্দ্রের জ্বালানি হিসেবে আগে গ্যাসটাই ব্যবহার করা হত। তাতে সবচেয়ে সুবিধে ছিল, পরিবেশ সুরক্ষায়। দূষণের ভয় থাকত না। নতুন নতুন কারখানায় হু হু করে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। জ্বালানিতে টান পড়ছে। জোগান দেওয়ার মতো অত গ্যাস কোথায়। বাধ্য হয়ে গ্যাসের জায়গায় কয়লা। তাতে বিতর্ক কম নয়। দূষণের প্রশ্ন উঁকি মারছে। তার উত্তর দিতে পারে বিশ্বই। শুধু ইউরোপ, আমেরিকায় নয়, দুনিয়ায় বেশিরভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র চলে কয়লায়। পরিবেশ বাঁচিয়েই কাজটা চলছে। অন্য জ্বালানির থেকে কয়লার সাপ্লাই বেশি। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের খাবার হিসেবে কয়লাই সবার আগে।

এখন কয়লাতেও হচ্ছে না। দরকার কম খরচে আরও শক্তিশালী জ্বালানি। তাতে পরমাণু শক্তির বিকল্প নেই। বাংলাদেশে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। উৎপাদন চড়চড়িয়ে বাড়বে। তাতেও যে বিদ্যুৎ চাহিদা শেষ হবে, তাও নয়। বিদ্যুৎ কেন্দ্র যত জ্বালানি পাবে, তত চাইবে। শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে বিদ্যুতের অঙ্গাঙ্গি সম্পর্ক। বিদ্যুৎ তো আকাশ থেকে ঝরে না মাটিতে তৈরি করতে হয়। বাংলাদেশ তাই করছে। চাইছে দেশের তরুণরা ভারতের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজটা করুক। প্রযুক্তি জানলে সহজ নইলে জটিল। তামিলনাড়ুর কুড়ামকুলামে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে শিক্ষার্থী পাঠাবে বাংলাদেশ। তারা হাতে কলমে কাজটা শিখে বাংলাদেশে প্রয়োগ করতে পারবে।

পরমাণু শক্তির অসামরিক ব্যবহারে ভারত-রাশিয়া চুক্তি হয়েছে ২০১৪তে। সেই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী তৃতীয় শক্তি হিসেবে বাংলাদেশকে কাছে টানতে পারে ভারত। রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি হয়েছে ২০১০-এ। পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারই তার উদ্দেশ্য। ভারত-রাশিয়া-বাংলাদেশের আর ত্রিপাক্ষিক চুক্তির দরকার নেই। ঢাকা থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে পরমাণু প্রকল্পের পরিকাঠামো গড়ার কাজ শেষ করেছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ-ভারতের পরমাণু সহযোগিতা পরিধি বাড়াতে দু’দেশ আরও একটি চুক্তিতে সই করবে। তার জন্য রাশিয়ার সম্মতির দরকার নেই। তিনটি দেশই একই সঙ্গে পরমাণু শক্তির নবতর বিন্যাসে কাজ করবে। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে প্রধান কাজ দু’দেশের পরমাণু প্রকল্পে হাত ধরে চলার গ্যারান্টি। যাতে পাশে থাকবে রাশিয়াও।