নিজের ছেলেকে ব্যাগের ভিতরে ভরে পাচার করেছেন আইভোরিয়ান এক ব্যক্তি। তার আট বছর বয়সী ছেলেকে সুটকেসের ভেতরে ভরে মরক্কো থেকে স্পেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ।
সরকারি আইনজীবীরা এই অপরাধের শাস্তি হিসেবে পিতা আলী ওয়াত্তারার কারাদণ্ড চেয়েছিলেন। কিন্তু তার সেই কড়া শাস্তি হয়নি। সন্তানকে যে সুটকেসে করা পাচার করা হচ্ছে সেটা পিতা জানতেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আর এ কারণে তার শুধু সামান্য জরিমানা হয়েছে।
পাচার হওয়া ১০ বছরের ছেলে আদু বলে, “আমি এবং আমার বাবা – আমরা কেউই জানতাম না যে তারা আমাকে একটি সুটকেসের ভেতরে ঢুকিয়ে দেবে,”। ছেলেটির পিতা ওয়াত্তারা ইতোমধ্যে এক মাস জেলে কাটিয়েছেন।
বিচারকদের আদু জানায় তার পিতা তাকে সবসময় বলেছিলেন যে তারা একটি গাড়িতে করে স্পেনে যাবেন। সুটকেসের ভেতরে করে পাচার হওয়ার সময় তার কেমন লাগছিলো সেই অভিজ্ঞতার কথাও আদু বিচারকদের জানিয়েছে। সে জানায় যে সেসময় তার শ্বাস নিতে খুব কষ্ট হচ্ছিলো।
ঘটনাটি ছিলো ২০১৫ সালের মে মাসের। অল্প বয়সী একটি মেয়েকে ভারী একটি ব্যাগ টেনে নিতে দেখে মরক্কো ও স্পেনের সুতা দ্বীপের সীমান্তের কর্মকর্তারা তাকে থামান। ১৯ বছর বয়সী এক নারী ওই ব্যাগটি টানছিলো।তারপর তারা যখন ওই ব্যাগটি স্ক্যান করে দেখেন তখন তার স্তম্ভিত হয়ে পড়েন। দেখেন যে ব্যাগের ভেতরে ছোট্ট একটি শিশু। মায়ের গর্ভের ভেতরে একটি শিশু যেমন ভঙ্গিতে অবস্থান করে শিশুটিও ব্যাগের ভেতরে ওভাবে বসেছিলো। পরে ব্যাগটি খুলে কর্মকর্তারা শিশুটিকে উদ্ধার করেন। তাকে বিধ্বস্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিলো।
কর্মকর্তারা প্রথমে ভেবেছিলেন ব্যাগের ভেতরে করে হয়তো মাদক পাচার করা হচ্ছে। কিন্তু পরে সুটকেসের ভেতরে শিশুটিকে দেখতে পেয়ে তারা অবাক হয়ে যান। এই অপরাধের বিচারকরা মি ওয়াত্তারাকে ৯২ ইউরো জরিমানা করেছেন।
স্পেনের সংবাদপত্রে সেসময় বরা হয়েছিলো যে নারী সুটকেসটি টানছিলো সে শিশুটির কোন আত্মীয় ছিলো না। শুধু ব্যাগটি টানার জন্যে তাকে অর্থের বিনিময়ে ভাড়া করা হয়েছিলো।বাচ্চাটি এখন তার মায়ের সাথে পারিসিয়ানে থাকে। তবে সাক্ষ্য দিতে সে এসেছিলো স্পেনের সুতা দ্বীপের একটি আদালতে।
“এখন তো সবকিছুর অবসান হয়েছে। আমি আমার স্ত্রী, কন্যা ও ছেলেকে নিয়ে এখন নতুন করে জীবন শুরু করতে পারি,” বলেন পিতা ওয়াত্তারা।
তিনি জানান, স্পেনের উত্তরাঞ্চলে তারা নতুন করে তাদের জীবন শুরু করবেন।বিবিসি।