মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডেনাল্ড ট্রাম্প সংবাদ মাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হয়তো চেয়েছিলেন, হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্টের আসনে হিলারি ক্লিনটন বসুক।রাশিয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে সাহায্য করেছে এমন বেশ কয়েকটি অভিযোগ এখন তদন্তাধীন রয়েছে।যদিও ট্রাম্প ও রাশিয়া বরাবরই এ হস্তক্ষেপের বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে।
সম্প্রতি জার্মানির হামবুর্গে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে প্রথমবারের মতো বৈঠক করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।ওই বৈঠকের পর ক্রিশ্চিয়ান ব্রডকাস্টিং নেটওয়ার্ককে দেয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প একথা বলেন।মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করে তাঁর ‘খুব ভালো লেগেছে’।
ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, লোকজনকে বলতে শুনি যে, তাদের সাক্ষাৎ করা উচিত নয়। ঠিক আছে, কিন্তু কোন মানুষগুলো এসব কথা বলে? আমারতো মনে হয় আমাদের বৈঠক দারুণ ছিল এবং সাক্ষাতের পর দু’জনেরই খুব ভালো লেগেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা পরমাণু শক্তিতে বেশ শক্তিশালী এবং রাশিয়ার ক্ষেত্রেও তাই। আর তাদের সঙ্গে কোনোরকম সম্পর্ক রাখতে না চাওয়ারতো কোনো মানে হয় না।’ট্রাম্প রাশিয়ার সহযোগিতার উদাহরণ টানতে সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতিতে দুপক্ষের একমত হওয়ার কথাটিও উল্লেখ করেন।ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বিজয়ী করতে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছে- এমন অভিযোগের বিপরীতমুখী মন্তব্য করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, তিনি ওই সংবাদমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘রাশিয়া চেয়েছিলো তাঁর প্রতিপক্ষ হিলারি ক্লিনটন নির্বাচিত হোক। কেন তারা হিলারিকে চেয়েছিলো? কারণ, হিলারি নির্বাচিত হলে আমাদের সেনাবাহিনী ধ্বংস হয়ে যেতো।’
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারাভিযান চলার সময় একজন রুশ আইনজীবীর সাথে বৈঠকের ব্যাপারে তার ছেলে ডোনাল্ড জুনিয়র যে বক্তব্য দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাকে সমর্থন করেছেন।তার ছেলে নিরপরাধ, স্বচ্ছ এবং নির্দোষ।রুশ আইনজীবী নাতালিয়া ভেসেলনিৎস্কায়ার সঙ্গে ওই বৈঠকের বিষযে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়রকে বলা হয়েছিল, তাকে রুশ সরকারের পক্ষ থেকে এমন তথ্য দেয়া হবে যা ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।
এই বৈঠকের খবর ফাঁস হওয়ার পর থেকেই এ নিয়ে তোলপাড় চলছে যুক্তরাষ্ট্রে।ট্রাম্প জুনিয়র নিজে ফক্স নিউজ-কে বলেছেন, ওই বৈঠকটা ‘কোনোও ব্যাপারই নয়’।তবে তিনি সেই সঙ্গে তিনি এটাও স্বীকার করেছেন বিষয়টা তার অন্যভাবে সামলানো উচিত ছিল।কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আবারও তার নির্বাচনী প্রচারণার সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক থাকার কথা অস্বীকার করেছেন।
রাশিয়া মার্কিন নির্বাচনে নাক গলানোর চেষ্টা করেছিল কিনা, তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এখন তদন্ত করছেন।প্র্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ট্রাম্পকে বারবার এই অভিযোগের সম্মুখীন হতে হয়েছে যে রাশিয়া তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিন্টনের প্রচারণায় অন্তর্ঘাত ঘটানোর চেষ্টা করেছিল।প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবশ্য বরাবরই বলে আসছেন তার এ ব্যাপারে কিছুই জানা ছিল না।
রাশিয়াও মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ আগাগোড়া অস্বীকার করে এসেছে।