কথায় বলে, রুচি বোঝা যায় পা দেখে। অধিকাংশ পুরুষই মুখ আর চুলের যত্নের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেন। অথচ যে পা দুটো নিয়ে বিশ্ব ঘুরে বেড়ান, তার বেলায়ই অবহেলা! ইতস্তত করে বলতেই হয়, ছেলেরা ধৈর্য ধরে পায়ের যত্ন একটু কমই নেন। সুন্দর গড়ন, রুচিশীল পোশাক আর ব্র্যান্ডের জুতা পরনে সচেতন আপনার পা দুটো যদি মলিন আর ফ্যাকাসে হয়, তবে কেমন লাগবে বলুন তো?
রোদ, ধুলোবালি ও কাদাপানিতে পায়ের ত্বক নষ্ট হয়ে যায়। নিয়মিত পায়ের যত্ন না নিলে ত্বকে মরা কোষ বাড়তে থাকে। ত্বক হয়ে পড়ে রুক্ষ। অনেকের আবার সারা বছরই পা ফাটে। এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চাই নিয়মিত পরিচর্যা। ঘরে বসেই নিতে পারেন পায়ের যত্ন।
পেডিকিউর
পায়ের যত্ন ও সুরক্ষায় সপ্তাহে অন্তত দুদিন পেডিকিউর করা উচিত। পেডিকিউরের প্রচলন শুরু হয় খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ অব্দে, সুদূর চীনে। পা ও নখের রোগ নির্মূল ছিল পেডিকিউরের মূল কাজ। বর্তমানে এটি সৌন্দর্যচর্চার অপরিহার্য একটি অংশ হিসেবে প্রভূত পরিচিত। নিয়মিত পেডিকিউর করলে পায়ের রুক্ষতা কমে যাবে। ফিরে পাবেন পেলব অনুভূতি।
উপকরণ
- ঈষদুষ্ণ গরম পানি
- শ্যাম্পু
- নেইল কাটার, নেইল ফাইলার
- পিউমিক স্টোন, ব্রাশ
- লেবু
- অলিভ অয়েল
- লবণ
- বেকিং পাউডার
- ময়েশ্চারাইজার
- প্লাস্টিকের বৌল
পেডিকিউর করার ১৫ মিনিট আগে পায়ে অলিভ অয়েল হালকা গরম করে মাস্যাজ করুন। প্লাস্টিকের বৌলে ঈষদুষ্ণ গরম পানি নিন। পানিতে এক টেবিল চামচ লবণ, দুই চা চামচ বেকিং পাউডার, অর্ধেক লেবুর রস ও পরিমাণমতো শ্যাম্পু মেশান। টানা ২০ মিনিট এ পানিতে পা ভিজিয়ে রাখুন।
এতে ময়লা নরম হবে। ব্রাশ ও পিউমিক স্টোন দিয়ে নখ, পায়ের পাতা ও গোড়ালি ভালোভাবে ঘষতে হবে। নখের চারপাশে সাদাটে পাতলা চামড়া দেখা দেয়। একটুখানি লবণ দিয়ে নখ ম্যাসাজ করে নিলে সঙ্গে সঙ্গেই উঠে আসবে সেগুলো। এবার পা মুছে নখ কেটে ফাইল করে নিন। ব্রাশ দিয়ে নখগুলোকে আবার আলতো করে ঘষে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে পা ধুয়ে ফেলুন। তোয়ালে দিয়ে মুছে পায়ে লাগান ময়েশ্চারাইজার। পা নরম রাখতে ভ্যাসলিন ও গ্লিসারিন একসঙ্গে মিশিয়ে লাগানো যেতে পারে।
পায়ের জন্য মাস্ক
মাসে সময় করে অন্তত দুদিন পায়ে মাস্ক লাগান। ভেষজ মাস্ক পায়ের ময়লা দূর করে, মরা কোষ ঝরিয়ে দেয় ও ছোপ ছোপ দাগ দূর করে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে। মধু ও পাকা কলা দিয়ে তৈরি পেস্ট পায়ে লাগান। পায়ের উজ্জ্বলতা বাড়াতে টক দই লাগানো যেতে পারে। পায়ের পাতার রোদে পোড়া দাগ তুলতে লেবুর রস লাগাতে পারেন।
স্ক্রাব
যাদের ত্বক শুষ্ক, তাদের মরা কোষ বেশি জন্মে। তাই গোসলের এক ফাঁকে ভেজা পায়ের পাতা, নখের চারপাশ ও গোড়ালিতে একটু লবণ ঘষে নিন। গোসল সেরে পায়ে যেকোনো তেল ম্যাসাজ করে নিতে হবে।
ময়েশ্চারাইজার
যেকোনো ত্বকের জন্যই ময়েশ্চারাইজার অত্যাবশ্যক। শুষ্ক মৌসুমে একটু বেশিই প্রয়োজন। রাতে ঘুমানোর আগে পায়ে যেকোনো তেল— নারকেল তেল, বেবি অয়েল, অলিভ অয়েল বা আমন্ড অয়েল লাগাতে পারেন। গোসলের পানিতে কয়েক ফোঁটা নারকেল তেল ফেলে গোসল সেরে নিলে দেহ ও পায়ের ত্বক উভয়ই সুন্দর থাকবে।
ফাটা গোড়ালি
পায়ের গোড়ালি ফেটে গেলে গ্লিসারিনের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে গোড়ালিতে লাগান। ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। অতিরিক্ত গরম পানিতে গোসল বা পেডিকিউর কোনোটাই করা উচিত নয়। এতে ত্বক শুকিয়ে যায় ও ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। রাতে শুতে যাওয়ার আগে ফাটা স্থানে একটু বেশি পরিমাণে ভ্যাসলিন লাগিয়ে নিন।