ডিএমপি নিউজঃ রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে পুলিশের উপর অতর্কিত আক্রমন ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। হামলায় পুলিশের সম্পূর্ণ নতুন দুইটি গাড়ি ভস্মীভূত হয়েছে ও ৫ জন অফিসারসহ আহত হয়েছে ২৩জন পুলিশ সদস্য। তারা সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
আজ (১৫ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১২ টায় নিজ কার্যালয়ে এক অনানুষ্ঠানিক ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের একথা বলেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম (বার), পিপিএম।
ব্রিফিংয়ে কমিশনার বলেন, বিএনপি’র কার্যালয়ের সামনে পুলিশের উপর আক্রমনের ঘটনাটি ছিল অনাকাঙ্খিত ও অপ্রত্যাশিত। ঘটনা কিভাবে কেন হয়েছে মিডিয়ার মাধ্যমে দেশসহ বিশ্বের সবাই দেখেছে।
এ সময় কমিশনার বলেন- গত ৭ দিন ধরে বিএনপি নমিনেশন পেপার ক্রয় এবং জমা দেওয়ার কাজ সুশৃংঙ্খলভাবে ও আনন্দমুখর পরিবেশে হয়েছে। গতকাল বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশিরা বড় বড় মিছিল নিয়ে, পদ শোভাযাত্রা ও বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে পুরো রাস্তা দখল করে এসেছে। এর ফলে পশ্চিমে কাকরাইল ও পূর্বে ফকিরাপুল সম্পূর্ণ রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, নির্বাচন আচরণ বিধিতে বলা হয়েছে রাস্তা অবরোধ করা যাবে না, পদ শোভাযাত্রা করা যাবে না, বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে জনগণের দুর্ভোগ করা তৈরি করা যাবে না। ওখানে কর্তব্যরত পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের অনুরোধ করেছিলেন যেন পুরো রাস্তাটি বন্ধ করে না দেয়া হয়। কেননা শহরের কেন্দ্রস্থল ও পাশেই মতিঝিল তাই মানুষের চরম দুর্ভোগ হচ্ছিল। এই অনুরোধ করার প্রেক্ষিতে যখন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা একটি বড় মিছিল নিয়ে এলেন, তখন পুলিশের এই অনুরোধ নিয়ে বাদানুবাদ শুরু হয়। এক পর্যায়ে কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই পুলিশের উপর অতর্কিত আক্রমন করা হয়। আক্রমনে বড় বড় লাঠি ব্যবহার করা হয়েছে। ৪-৫ হাত লম্বা লাঠি ব্যবহার করা হয়েছে। তাহলে এ লাঠি এখানে কিভাবে এলো । এ ব্যাপারে আমরা সুনিশ্চিত হয়েছি পুলিশের উপর আক্রমন ছিল সম্পূর্নভাবে পূর্বপরিকল্পিত। পুলিশকে উত্তেজিত করে, একটি দুর্ঘটনা ঘটিয়ে নির্বাচনী পরিবেশকে ভন্ডুল করা, অনিশ্চিত পরিবেশ সৃষ্টি করার অসৎ উদ্দেশ্যে পুলিশের উপর এ ধরনের হামলা করা হয়েছে।
এ সময় কমিশনার আরও বলেন- গাড়িতে আগুন লাগিয়ে ও গাড়ির উপর দাঁড়িয়ে যারা তান্ডব চালিয়েছে সেগুলো বিভিন্ন মিডিয়ার সুবাদে দেশবাসি দেখতে পেরেছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে তাদের পরিচয় আমরা পেয়েছি। তাদের সনাক্ত করতে পেরেছি। তারা সকলেই বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী।
কমিশনার বলেন- আমাদের ৫ জন পুলিশ অফিসারসহ ২৩ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তারা সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাদেরকে বাঁশ দিয়ে, লাঠি দিয়ে পিটানো হয়েছে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছোঁড়া হয়েছে।
কমিশনার আরও বলেন- ঘটনার পর্যবেক্ষণ করে ইতিমধ্যে আমরা ৩টি মামলা রুজু করেছি এবং ৬০ জনকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার ফুটেজ দেখে ৩০ জনকে সনাক্ত করা হয়েছে বাকীদের সনাক্ত করার কাজ অব্যাহত রয়েছে। মামলাটি নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করার জন্য ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ ও মতিঝিল ক্রাইম বিভাগের চৌকস অফিসারদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।