দেশপ্রেমিক পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বিএনপির তথাকথিত নেতাদের আপত্তিকর বক্তব্যের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
৪ এপ্রিল (সোমবার) বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আল মামুন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনারের বিরুদ্ধে দেওয়া বিএনপির নেতাদের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধের সূচনা করেন বাঙালি পুলিশ সদস্যরা। দেশের স্বাধীনতার জন্য সহস্রাধিক পুলিশ সদস্য তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেন। ১৪ হাজার পুলিশ সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের উত্তরাধিকারী বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা সেবার সুমহান ব্রত নিযে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনসহ দেশের প্রতিটি সংকটে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নির্ভীক পুলিশ সদস্যরা দেশপ্রেমের দৃপ্ত শপথে বলীয়ান হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখে দেশের চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। করোনা সংকটে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা সন্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, দেশের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা ও সামাজিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশে বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে পুলিশ সদস্যরা সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছে। অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে বাংলাদেশ আজ যে কোন বিবেচনায় নিরাপদ। ফলে বিদেশী বিনিয়োগসহ সকল প্রকার বিনিয়োগকারী বাংলাদেশকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আদর্শ স্থান হিসেবে বিবেচনা করছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আলোচনায় পুলিশের আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা রাজনৈতিক দলকে উদ্দেশ্য করে নয় বরং বাংলাদেশের অভ্যুদয় এবং মুক্তিযুদ্ধের সত্য ও সঠিক ইতিহাসের আলোকে শতভাগ সত্য বক্তব্য প্রদান করেছেন। যা স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিরা মেনে নিতে না পারলেও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির মানুষরা ঠিকই এই সত্য বক্তব্য প্রদানের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, রাতের আঁধারে বিনা বিচারে হাজার হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকারী অবৈধ সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বেচ্ছায় ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে অবস্থান করে কি করেছেন সেটা দেশবাসী ভালো করেই জানে। অনেক বিএনপি নেতারাও এই সত্য স্বীকার করে বিভিন্ন সময় বক্তব্য ও লেখালেখি করেছেন। কতিপয় বিএনপি নেতা এখন এই সত্য অস্বীকার করলেও এদেশের মানুষ তাদের মিথ্যাচার খুব সহজেই বুঝতে পারে। কারণ ইতিহাস তার আপন গতিতে চলে।
সত্য কখনো চাপা থাকে না উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয় মির্জা ফখরুল ও রিজভীর বক্তব্যে আবারও প্রমাণিত হয়েছে যে, স্বাধীন বিরোধী অপশক্তির মুখপাত্র বিএনপি এখন মিথ্যুকদের দলে পরিণত হয়েছে। মহান স্বাধীনতার মাসে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধের সূচনাকারী গর্বিত পুলিশের আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার এর বিরুদ্ধে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বিএনপির মহাসচিব ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন সমাবেশ এবং গণমাধ্যমে আপত্তিকর, আক্রমণাত্মক, বিভ্রান্তিকর ও বিব্রতকর বক্তব্য প্রদান করছেন যা পরিকল্পিত, অশোভনীয় ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। দেশপ্রেমিক পুলিশের মতো পেশাদার বাহিনী সম্পর্কে বিএনপি নেতাদের এ ধরণের হুমকি প্রদানপূর্বক বক্তব্যের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। দেশপ্রেমিক পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ঘৃণ্য বক্তব্য দিয়ে বিএনপি দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। বিএনপি-জামাত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা করছে। বাংলাদেশকে ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এদেরকে রুখে দেয়ার এখনই উপযুক্ত সময়।
বিবৃতিতে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবিরকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। অন্যথায় মির্জা ফখরুল ও রুহুল কবির রিজভীকে গ্রেফতারসহ বিএনপি নামক সন্ত্রাসী দলকে নিষিদ্ধের দাবিতে দেশব্যাপী কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।