পিএসজির হয়ে নেইমারের অভিষেকটা হয়েছিল গেগার মাঠে। সেই ম্যাচে ৩-১ ব্যবধানের জয়ে এক গোল, এক অ্যাসিস্ট আর ম্যাচজুড়ে অসামান্য ফুটবলের প্রদর্শনীতে পিএসজি সমর্থকদের মন জয় করে নিয়েছিলেন বার্সেলোনা থেকে রেকর্ড ট্রান্সফার ফিতে পিএসজিতে যোগ দেওয়া এই ফুটবলার। কে জানত, ‘দ্বিতীয় অভিষেক’ বা ঘরের মাঠে নিজের প্রথম ম্যাচে নেইমার ছাপিয়ে যাবেন সেদিনের পারফরম্যান্সকেও! পিএসজির মাঠ পার্ক দ্য প্রিন্সে পায়ের জাদুতে রোববার রাতের সবটুকু আলো নিজের দিকে কেড়ে নিলেন নেইমার। তার জোড়া গোল এবং সতীর্থদের গোলে অবদানের বদৌলতে তুলুজকে ৬-২ গোলে বিধ্বস্ত করেছে পিএসজি।
এদিন অবশ্য শুরুতে এগিয়ে গিয়েছিল তুলুজই। ১৮তম মিনিটে বাঁ দিক থেকে করা ভলিতে পিএসজির জালে বল জড়ান ম্যাক্স গ্রাদেল। ২৬তম মিনিটে নেইমারের হেড পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। তবে পাঁচ মিনিট পরই ঘরের মাঠে নিজের প্রথম গোলের দেখা পান তিনি, খেলায় ফেরান সমতা। নেইমারের কাছ থেকে পাওয়া বলে আদ্রিয়েন রাবিও গোলে শট নিলেও সেটা ফিরিয়ে দেন তুলুজ গোলরক্ষক অ্যালবান লাফন্ট। তবে বল হাতে জমাতে পারেননি লাফন্ট, দুরন্তগতিতে বলের দখল নিয়ে ফিরতি শটে লক্ষ্যভেদ করেন নেইমার। ৩৫তম মিনিটে এগিয়ে যায় পিএসজি। নেইমারের পাস থেকে পাওয়া বলে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে বাঁ পায়ের জোরালো শটে জাল খুঁজে পান রাবিও। দ্বিতীয়ার্ধের প্রায় অর্ধেক সময়ে দুই দলের কেউই গোলের দেখা পায়নি। তবে পিএসজির জন্য বড় ধাক্কা হয়ে আসে ৬৯তম মিনিটে ডিফেন্ডার মার্কো ভেরাত্তির লালকার্ড।
তুলুজের অধিনায়ক ক্রিস্টোফার জুলিয়েনকে ফাউল করে লালকার্ড পান ভেরাত্তি। দশজনের দলে পরিণত হওয়া পিএসজির ধার কমার বদলে যেন আরও বেড়ে যায়। ৭৫তম মিনিটে ডি-বক্সের ভেতর নেইমার ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টি পায় পিএসজি। সেই পেনাল্টি থেকে ব্যবধান আরও বাড়ান এডিসন কাভানি। ৭৮তম মিনিটে পিএসজির আরেক ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার থিয়াগো সিলভার মাথার পেছনে লেগে বল নিজেদের জালে ঢুকলে ব্যবধান নেমে আসে ৩-২-এ। তবে ৮২তম মিনিটে ২২ গজ দূর থেকে জোরালো শটে হাভিয়ের পাস্তেরো পিএসজির চতুর্থ গোলটি করলে জয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়। দুই মিনিট পর নেইমারের কর্নার থেকে দারুণ এক ভলিতে গোল করেন ডিফেন্ডার লেইভিন কুরজাওয়া।
আর যোগ করা সময়ে অসামান্যভাবে তুলুজের রক্ষণভাগকে ফাঁকি দিয়ে বাঁ দিকে নিচু শটে করা নেইমারের দ্বিতীয় গোল তুলুজের কফিনে ঠুকে দেয় শেষ পেরেক। ম্যাচ শেষে নতুন ঘরের মাঠ ও সমর্থকদের প্রশংসায় ভাসিয়েছেন ২৫ বছর বয়সী এই ফুটবলার। বললেন, ‘এখানকার সমর্থক, দলের অন্যান্য খেলোয়াড় এবং যেভাবে আমরা পারফর্ম করছি, সবকিছু মিলিয়েই আমি অনেক খুশি। খুব চমৎকার একটা অভিজ্ঞতা এটা আমার জন্য। এখানকার পরিবেশটা দুর্দান্ত।’
পরিবেশ দুর্দান্ত তো তার উপস্থিতির জন্যই! দুর্দান্ত তো তিনি নিজেও!