সদ্যপ্রয়াত স্ত্রীর লেখা চিঠি পেয়ে স্বভাবতই আবেগাপ্লুত রফ ক্রিস্টোফারসেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তার স্ত্রী যখন ওই চিঠি লিখে পাঠিয়েছেন তখন তিনি নরওয়ের নৌবাহিনীর নাবিক হিসেবে কাজ করছিলেন। অনাগত সন্তানের কথা জানিয়ে স্বামীকে চিঠি লিখেছিলেন ৭২ বছর আগে। কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সেই চিঠি স্বামীর হাতে পৌঁছেনি। যখন পৌঁছেছে তখন প্রেরক ভার্জিনিয়া নামের সেই নারী পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেছেন পরপারে।
১৯৪৫ সালের ৪ মে লেখা সেই চিঠি ২০১৭ সালের মে মাসের চলতি সপ্তাহে হাতে পান রফ ক্রিস্টোফারসেনের ছেলে। তিনি তখন অফিসে ছিলেন। অফিস থেকেই ক্যালিফোর্নিয়ার বাসায় থাকা বাবাকে ফোন করে চিঠি পড়ে শোনান।
‘প্রিয় স্বামী’ সম্বোধন করে চিঠিটিতে ভার্জিনিয়া লেখেন, তুমিও কী আমাকে মিস করছো যেমনটা আমি তোমাকে মিস করছি? আমি ভেবে অবাক হই অবসরের সময়টা তুমি এখন কীভাবে কাটাও। আশা করি ওষুধটা ঠিকমতো খাচ্ছো, কিছুতেই তোমার আর অসুস্থ হওয়া চলবে না।
আর লক্ষ্মী ছেলের মতো মদ-টদ থেকে দূরে থাকবে। তোমার ফেরার অপেক্ষায় আছি, তবে তোমার সঙ্গে আবার দেখা হওয়ার বিষয়টি নিয়েও কিছুটা উদ্বিগ্ন। আমি এখন কুৎসিৎভাবে বড় হয়ে গেছি, আমাকে দেখতেও অনেক মোটা দেখায়। আমার ধারণা অবস্থা আরও খারাপ হবে।
যাই হোক ভালোই আছি, চিকিৎসকও বলেছেন সব ঠিকঠাক আছে। আমি খুব খুশি। নিজেকে খুব গর্বিত মনে হচ্ছে কারণ আমি এমন একজনের সন্তান গর্ভে ধারণ করেছি যাকে আমি পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি। আমার সবসময় মনে হয়, তোমার একটা অংশ সবসসময় আমার সঙ্গেই আছে।
বাচ্চার কথা তো অনেক হলো। কিন্তু তুমিই আমার জীবনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তোমাকে ভালোবাসি, রফ। যেমনটা আমি সূর্যের উষ্ণতাকে ভালোবাসি। সূর্যকে ঘিরে যেমন সবকিছু আবর্তন করে আমার কাছে তুমি তেমনটাই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি, খুব দ্রুত বাড়ি ফিরে আসবে, আমার পাশে থাকবে।
মৃত্যু ছাড়া কেউ আমাদের আলাদা করতে পারবে না।
ভার্জিনিয়া