গাজা সীমান্তে সুড়ঙ্গ ধ্বংসের সময় ফিলিস্তিনের ৭ নাগরিককে হত্যা করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এ সময় অন্তত ৯ জন আহত হয়েছেন। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ইসরাইলি বাহিনী সুড়ঙ্গ ধ্বংসে অভিযান চালায়। এ সময় বিস্ফোরণ ও হামলার ঘটনায় তারা হতাহত হন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ-আল কুদরা এক বিবৃতিতে বলেছেন, গাজার খান ইউনুস এলাকা থেকে আহত ৯ জনকে নিকটবর্তী আল-আকসা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে পাঁচজন হামাসের সামরিক শাখা আল-কুদস ব্রিগেডের সদস্য। তারা হলেন- ব্রিগেড কমান্ডার আরাফাত মারসুড, ডেপুটি কমান্ডার হাসান আবু হাসনাইন, আহমাদ খলিল আবু আরমানেহ। তাদের সবার বয়স ২৫ বছর। আর ওমর নেসার আল-ফালেত ও জিহাদ আল-সামিরির বয়স ২৭ বছর।নিহত অন্য দু’জন হলেন- হামাসের ইজ এডিন আল-কাশেম ব্রিগেডের সদস্য মেসবাহ সাবির ও মোহাম্মদ আল-আগা। তাদের দু’জনেরই বয়স ৩০ বছর।
মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ এ ঘটনার পর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।হামাস সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সকল ধরনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমরা আমাদের অধিকার আদায়ের লড়াই অব্যাহত রাখব।’এতে আরও বলা হয়, ‘দখলদার সরকারকে সতর্ক করে দিতে চাই- আমরা আমাদের সকল শক্তি ও সামর্থ দিয়ে জনগণকে রক্ষা করব।’পরে হামাস এক টুইটে জানিয়েছে, ইসরাইল এই হামলার মাধ্যমে গাজার বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে ‘নতুন করে যুদ্ধ’ শুরু করেছে।
ফিলিস্তিনের স্থানীয় গণমাধ্যম খবর দিয়েছে, ইসরাইলের বিমান বাহিনী ওই সুড়ঙ্গে হামলা চালিয়েছে।ফিলিস্তিনের সংবাদ সংস্থা ওয়াফা খবর দিয়েছে, ইসরাইল তার সীমান্ত বাড়ানোর অংশ হিসেবে খান ইউনুস এলাকার ওই সুড়ঙ্গে ৫টি মিসাইল নিক্ষেপ করে।
অবশ্য ইসরাইল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এই সুড়ঙ্গ তাদের সীমান্ত দেয়ালের নিকটবর্তী এলাকায় তৈরি করা হচ্ছিল। বিষয়টি নজরে আসার পর সেটি গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
২০০৮ সালের পর থেকে খান ইউনুস এলাকায় ইসরাইলি বাহিনী এ ধরনের তিনবার হামলা করল। সোমবারের আগে ২০১৪ সালের গ্রীষ্মে ইসরাইলি বাহিনী ‘অপারেশন প্রটেক্টিভ এজ’ পরিচালনা করে। এতে ২ হাজার ২শ’ ফিলিস্তিনি নিহত হন।একই সময়ে হামাসের প্রতিরোধে ৬৬ ইসরাইলি সেনা ও ৭ বেসামরিক নাগরিক নিহত হন।২০০৭ সালের জুন থেকে ইসরাইল গাজা অবরুদ্ধ করে রেখেছে। তারা গাজার আকাশ ও জলসীমার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তিনটি সীমান্ত ক্রসিংয়ের মধ্যে দুটি ইসরাইল এবং অপরটি মিশর দখলে রেখেছে।