গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন সাদামাটা একজন বাঙালি, যিনি সাহেবী পোশাক পরতেন না, যার জীবনবোধ ছিলো পরিপূর্ণরূপে একজন নির্ভেজাল বাঙালির। বঙ্গবন্ধু ছিলেন টুঙ্গিপাড়ায় অজোপাড়া গ্রামে জন্ম নেয়া একজন মানুষ, যিনি শৈশব থেকে অপ্রতিরোধ্য সংগ্রামে নিজেকে নিভৃত করার ভেতর থেকে বাঙালি জাতির মহান নেতায় পরিণত হয়েছিলেন। এ মানুষটিকে আমাদের স্বপ্নের জায়গায়, বিশ্বাসের জায়গায়, নীতি-নৈতিকতার জায়গায়, মূল্যবোধের জায়গায় পবিত্রতার সঙ্গে শ্রদ্ধা করে, তিনি কি চেয়েছিলেন, সেটি নিয়ে আমাদের এগিয়ে আসা দরকার’।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ৯৯তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশন, সিঙ্গাপুর আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সারা জীবনের আরাধ্য সাধনা ছিলো, পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ প্রতিষ্ঠিত করা, যেখানে বৈষম্য থাকবে না, দুর্নীতি থাকবে না, হানাহানি থাকবে না, সাম্প্রদায়িকতা থাকবে না। বঙ্গবন্ধুর হৃদয় ছিলো হিমালয়ের মতো বড়, মহানুভবতা ছিলো সমুদ্রের মতো। সে মানুষটিকে কিছু কলঙ্কিত বাঙালি আর দেশী ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞের স্বীকার হতে হয়েছিলো।
তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা মৃত্যুঞ্জয়ী শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিপূর্ণভাবে রূপান্তর করার জন্য। শেখ হাসিনা মনে করেন ক্ষমতা নিজের বিত্ত-বৈভবের জন্য নয়। ক্ষমতা মানুষের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করার জন্য, ক্ষমতা প্রান্তিক মানুষের দূঃখ দূর করার জন্য। শেখ হাসিনা চান, বাংলাদেশের একজন মানুষ যেনো বস্ত্রহীন না থাকে, অন্নের অভাবে না থাকে, একটি বাড়িতেও যেনো বিদ্যুতের অভাব না থাকে, আধুনিকতার ছোঁয়া যেনো প্রতিটি মানুষ পায়। দুর্নীতির ব্যাপারে শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতি। এই দৃঢ়তা যিনি ধারণ করেছেন আমরা তাঁকে দেখি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিচ্ছবি হিসেবে’।
সিঙ্গাপুরে থাকা বাঙালিদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা বাংলাদেশের দূত। আপনাদের কৃতকর্মই বলে দেবে বাংলাদেশ কেমন। আপনি ভালো আচরণ করলে এখানের মানুষেরা ভাববে বাঙালিরা এরকম। আপনি যদি অনিয়মের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন, এখানের মানুষ ধরে নেবে বাংলাদেশ বোধ হয় এরকম’।
সিঙ্গাপুরে প্রবাসী বাঙালিদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ বিভিন্ন সূচকে এগিয়ে চলেছে। মাথা পিছু আয়, গড় আয়ু বেড়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে এবং বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর এ এগিয়ে চলার ক্ষেত্রে আপনার অনেক বড় সহায়ক। আপনারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন। আপনার অস্তিত্বের উৎস বাংলাদেশ। আপনার সন্তানকে বাংলা, বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৃষ্টি-সংস্কৃতি শেখাতে হবে। আপনার বন্ধন মায়ের জন্য যেমন, দেশমাতৃকার জন্যও যেনো তেমন হয়।’
উক্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হাইকমিশন, সিঙ্গাপুর-এর হাইকমিশনার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, হাইকমিশনের কর্মকর্তাবৃন্দ, সিঙ্গাপুরস্থ বাংলাদেশ সোসাইটি ও চেম্বারের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।