আজ ১০ মে ২০১৭ তারিখে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাাশিত সংবাদের তথ্যমতে জানা যায় গত ০৯ মে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক অনুষ্ঠানে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান জনাব কাজী রিয়াজুল হক মন্তব্য করেছেন, “ঢাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনার এক মাস পরও পুলিশ কিছু জানলো না, তারা কোন কিছুই করতে পারল না, তাহলে পুলিশের প্রয়োজনটা কি আমাদের জন্য?” ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তার এ বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। সাম্প্রতিক এ ঘটনা সম্পর্কে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বক্তব্য নিম্নরুপ:-
বাদী গত ৪ মে ২০১৭ তারিখে বনানী থানায় উপস্থিত হয়ে তাকে গত ২৭ মার্চ দিবাগত রাতে ২০১৭ তারিখে ধর্ষণ করা হয়েছে মর্মে কর্তব্যরত অফিসারকে অবহিত করেন। ধর্ষণের মত স্পর্শকাতর একটি অপরাধের অভিযোগ দীর্ঘ ৩৭দিন পর থানাকে অবহিত করায় ঘটনার সত্যতা ও বাস্তবতা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন দেখা দেয়। আইনের মূল নীতি হচ্ছে প্রকৃত অপরাধীকে শাস্তি দেওয়ার পাশাপাশি নিরপরাধ কোন ব্যক্তি যাতে শাস্তি না পায় বা হয়রানি না হয় তার নিশ্চয়তা বিধান করা। ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের আলোকেই মামলা রুজুর বিলম্বের কারণ এবং ঘটনাটির বাস্তবতা ও সত্যতা সম্পর্কে প্রাথমিক তদন্তের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। বনানী থানা পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় ৬ মে ২০১৭ তারিখে নিয়মিত মামলা রুজু করে।
মামলা রুজু হওয়ার পর পর থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ ছায়া তদন্ত শুরু করে। বাদীর অভিপ্রায় অনুযায়ী মামলার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত ও দ্রুত আসামী গ্রেফতারের লক্ষ্যে বর্তমানে মামলাটির তদন্তভার উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগে ন্যাস্ত করা হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ, অপরাধ বিভাগ ও উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সমন্বয়ের মাধ্যমে সর্বোচ্চ সামর্থ দিয়ে আসামীদের গ্রেফতারের সর্বাত্মক প্রচেস্টা ও উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছে। ঘটনার ৩৭দিন পর থানা পুলিশকে অবহিত করার কারণে ঘটনা সংশ্লিষ্ট অনেক আলামত ও সাক্ষ্য প্রমাণ বিনষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার আলামত ও সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
যে মুহূর্তে পুলিশ আসামী গ্রেফতারে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করছে ঠিক সে মুহূর্তে এ ধরনের মন্তব্য তদন্তকারী সংস্থা তথা বাংলাদেশ পুলিশকে হেয় প্রতিপন্ন করার সামিল। সাম্প্রতিক সময় জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস দমনসহ ধর্ষণ-খুন, রাহাজানি প্রভৃতি অপরাধ নিয়ন্ত্রনে পুলিশের সাফল্য যখন সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে তখন আলোচ্য ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের মত গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে এ ধরনের বাস্তবতা বিবর্জিত মন্তব্য পুলিশের প্রতি সাধারন মানুষের মনে বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি করতে পারে যা কোনভাবেই কাম্য নয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সংশ্লিষ্ট সকল মহলের কাছে বাস্তব ও দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করে।