দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেছেন, দেশের ১৭টি জেলার বন্যাপ্লাবিত ইউনিয়নসমুহের প্রত্যেকটিতে ‘আশ্রয়কেন্দ্র’ নির্মাণ করা হবে ।এ ব্যাপারে প্রকল্প গ্রহণের কাজ শিগগিরই শুরু হবে।
মন্ত্রী আজ উত্তরাঞ্চলের বন্যাপ্লাবিত এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরনের তৃতীয় দিনে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে স্থানীয় কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন।
ত্রাণমন্ত্রী বলেন,সরকার বন্যাপ্লাবিত জেলাসমূহের জন্য ইতোমধ্যে ৬ হাজার ১শ’ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১ কোটি ৫৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৩৯ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ করেছে। প্রতি জেলায় ঘন্টায় ২ হাজার লিটার ক্ষমতাসম্পন্ন পানি বিশুদ্ধকরণ মোবাইল গাড়ি প্রেরণ করেছে।
এর বাইরে গত মার্চ মাসে আগাম বন্যায় ফসলহানির কারণে সিলেট অঞ্চলের জেলাসমূহে প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার পরিবারকে ভিজিএফ কার্ড দেয়া হয়েছে, যা চলমান রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।জেলা প্রশাসকদের চাহিদা মত প্রয়োজনীয় খাদ্যশষ্য ও আর্থিক বরাদ্দ দেয়া হবে। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ত্রাণ কার্যক্রম চলমান থাকবে। একটি লোকও যাতে খাবারে কষ্ট না পায় তার জন্য সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যেতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেন তিনি । মন্ত্রী কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদেরকে ত্রাণ বিতরণে সমন্বয় ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেওয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, প্রত্যেকটি জেলার বন্যা পরিস্থিতি সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত বন্যা ও ত্রাণ কার্যক্রমের খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। জেলা পর্যায়ে বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন, সমন্বয় ও ত্রাণ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় সহযোগিতা করতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রতি জেলায় উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা সংযুক্ত করা হয়েছে বলেও মন্ত্রী জানিয়েছেন ।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া মেডিক্যাল টিমগুলোকে প্রতিদিন বন্যা কবলিত এলাকার প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্র নিয়মিত পরিদর্শন করে সেবাকার্য চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন। বন্যা প্লাবিত এলাকার টিউবওয়েলগুলো উঁচু করে পানি বিশুদ্ধকরণ টেবলেট দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানান তিনি।
মায়া চৌধুরী বলেন, পানি বাহিত রোগ থেকে দুর্গত মানুষদের রক্ষা করতেই এ সব ব্যবস্থা নিতে হবে।
মন্ত্রী পরে গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ত্রাণ বিতরণ করেন। এ সময় তিনি মানুষের দু:খ-কষ্টের কথা শুনেন। কষ্ট লাঘব না হওয়া পর্যন্ত সরকার তাদের পাশে থাকবে বলে মন্ত্রী আশ্বাস দেন। এ এলাকাটি বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ডেপুটি স্পিকার এডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ শাহ্ কামাল, জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল,আওয়ামী লীগের জেলা সভাপতি এডভোকেট শামসুল আলম হিরুসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।