প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে প্রায় সাড়ে চার লাখ মানুষের মৃত্যু হয় প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডের ফলে। এছাড়াও শুধুমাত্র পর্যাপ্ত উদ্ধারকাজের অভাবে ভূমিকম্প ও দালান ধসের কারণে মৃত্যু হয় ১৪ হাজার মানুষের। এর সকল সমস্যার সহজ প্রাযুক্তিক সমাধান বােল দিয়ে বিশ্বকে মাত করছে বাংলাদেশের টিম ‘আত্ম-উন্মেষ’। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা আয়োজিত বিশ্বের সর্ববৃহত্ হ্যাকাথন প্রতিযোগিতা, ‘নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ’ এর ফাইনাল রাউন্ডে বর্তমানে প্রতিযোগিতা করছে দলটি। গত ২৯-৩০ এপ্রিলে আয়োজিত প্রতিযোগিতাটির জোনাল রাউন্ডে ৫০টি টিমের সাথে প্রতিযোগিতা করে টিমটি ঢাকা আঞ্চলিক পর্যায়ে লোকাল পিপলস’ চয়েস পুরষ্কার বিজয়ী হয়।
এরপর দুই সপ্তাহব্যাপী সেমিফাইনাল রাউন্ডের ভোটিং এ শীর্ষ পাঁচে জায়গা ধরে রেখে মনোনীত হয় ফাইনালের জন্যে। সর্বশেষ গ্লোবাল লিডারশিপ তালিকা অনুসারে, প্রকল্পটি দ্বিতীয়স্থানে অবস্থান করছিল। ৫ জুন পর্যন্ত অনলাইন ভোটাভুটি শেষে, বিজয়ী ঘোষণা করা হবে এই শীর্ষ ৫ দল থেকে।
“আত্ম-ঊন্মেষ” এর প্রকল্পের বিষয়ে টিম লিডার মো. আসিফ ইমরুল বলেন, আপাতদৃষ্টিতে “আত্ম-ঊন্মেষ” এর বানানো প্রকল্পটি বিশ্বের প্রথম কম্বো এপ্লিকেশন, যেখানে একই সাথে মোবাইল গেইমিং ও ব্যক্তিনিরাপত্তার বিষয়াদির সমন্বয় করা আছে। আত্মউন্মেষ ছোট্ট একটা গবেষণা চালিয়ে দেখেছে যে আমাদের স্মার্টফোনে যতোটা না কাজের এপস্ থাকে, তার থেকে বেশি থাকে গেমিং এপস্! তাই এই ছোট্ট দলটি এমন একটি গেমস ডেভলপ করার চেষ্টা করেছিলো যা দিয়ে খেলার পাশাপাশি কাজ দু’টোই হবে!
দলটির অপর সদস্য মারিয়া রফিক জানান, তারা একটি এপস্ বানিয়েছে যা ব্যবহারকারীকে মহাকাশ সম্পর্কে খেলার ছলে নানা তথ্য জানাবে এবং পাশাপাশি নানা বিপদে আপদে আপনার কাজে আসবে। ধরুন আপনি ভূমিকম্পের ফলে কোনো এক বিল্ডিং এ আটকা পড়লেন, আপনি এই এপস্ ব্যবহার করে আপনার নিখুঁত অবস্থান জানাতে পারবেন। কোথাও আগুন দেখলেন, এপস ব্যবহার করে আপনি সতর্কবাণী পাঠাতে পারবেন পুলিশ, ফায়ার ব্রিগেড ও নাসা ডেটা সেন্টারের কাছে।
এছাড়া প্রকল্পের অংশ হিসেবে, যুক্ত করা হয়েছে নিজস্ব রোবোটিক প্রোটোটাইপ ‘রোবো১৮০৪’, যা অ্যাপের ডিসেন্ট কন্ট্রলিং এর মাধ্যমে বনভূমিতে ঘুরে তাপমাত্রার পরিবর্তন নির্ধারণ করে সতর্ক করবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে। ক্ষেত্র বিশেষে আগুনে পানি ও কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস ছড়ানোর ব্যবস্থাও আছে এর সাথে।
দলের আরেক সদস্য অনিমেষ মিত্রর মতে, ভবিষ্যতে এই প্রকল্পের বহুমুখী প্রয়োগ সম্ভব। শুধু দাবানল নয়, ভূমিকম্প, সাইক্লোনসহ যাবতীয় দূর্যোগ ও বিশেষক্ষেত্রে অপরাধনির্মূলে সক্ষম আমাদের এই অ্যাপলিকেশন। “আত্ম-ঊন্মেষ”র এখন আরো একধাপ এগিয়ে নিতে প্রয়োজন সমর্থন। অনলাইন ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হলেই প্রকল্পটি চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় মনোনীত হবে।
“আত্ম-ঊন্মেষ”কে প্রথমবার ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে, প্রথমেই ”https://2017.spaceappschallenge.org/auth/signup” লিংক এ গিয়ে একটি একাউন্ট খুলতে হবে। সাইন আপ করা হয়ে গেলে ইমেইল এর মেইল বক্স এ ঢুকে “verifz your account” এ কনফার্ম করবেন।
একাউন্ট তৈরি হয়ে গেলে, “https://2017.spaceappschallenge.org/vote/finalists” এ গিয়ে দেখতে পাবেন এই টিমকে। তখন ভোট বাটন টি চেপে রাখতে হবে যতক্ষন না এটি সবুজ হয়।সবুজ হলেই ভোট দেয়া হয়ে গেছে বলে গণ্য হবে। পরের বার থেকেঃ শুধু লগইন করে “https://2017.spaceappschallenge.org/vote/finalists” এ গেলেই দেখতে পাবেন এই টিমকে। তখন ভোট বাটন টি চেপে রাখবেন যতক্ষন না এটি সবুজ হয়।তাহলেই ভোট দেয়া হয়ে যাবে। প্রতিদিন একটি দলকে একটি করে ভোট দেওয়া যাবে।
যেকোনো তথ্যের জন্য ইভেন্ট লিঙ্কঃ https://www.facebook.com/events/260940634
বাংলাদেশের সমর্থনে, সমর্থকেরা ফেসবুক প্রোফাইলের ছবিতে সমর্থনব্যাচ (https://www.facebook.com/profilepicframes/?selected^overlay^id=১৩০২১২৪১৩৬৫০২৮১১) যুক্ত করতে পারেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশি কোনো প্রকল্প পিপলস চয়েজ ক্যাটাগরিতে ফাইনালে উঠে আসা বাংলাদেশের জন্য খুবই আনন্দ এবং গবের্র। গতবছর বাংলাদেশি অপর একটি দল ‘মার্সিয়ান ওয়েসিস’ ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল। অল্প ভোটের ব্যবধানে সেবারের শিরোপা বাংলাদেশের হাতছাড়া হয়ে যায়। তাই এবার অনলাইনে ভোট প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশি এ প্রকল্পকে বিজয়ী করার মোক্ষম সময় এখন। তাই সবার প্রতি প্রকল্পটির জন্য ভোট প্রদানের আহ্বান করছি।