প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে বিদ্যমান ধর্মীয় সম্প্রীতি থেকে শিক্ষা গ্রহণের জন্য মিয়ানমারের প্রতি পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি ধর্মীয় সম্প্রীতির ঐতিহ্য বজায় রেখে দেশ কিভাবে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার সেই শিক্ষা নেবে।’
রবিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন বৌদ্ধ ধর্মী কল্যাণ ট্রাস্ট এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং, বৌদ্ধ কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্ত ভুবন বড়ুয়া, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বৌদ্ধ সংঘ নায়ক শুদ্ধানন্দ মহাথেরো, উপ সংঘ রাজ সত্যপ্রিয় মহাথেরো, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের যুগ্ম মহাসচিব উত্তম কুমার বড়ুয়া, ইউরোপিয়ান স্কুল অব ল’ ইন লন্ডনের ডীন এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা জনগণের তাদের জন্মভূমিতে বসবাস করার অধিকার সুরক্ষিত হতে হবে এবং তাদেরকে সেখানে বাস করার জন্য সার্বিক সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে।
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী, যেখানে রোহিঙ্গাদের ওপর অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে এবং এর ফলে ব্যাপক সংখ্যক রোহিঙ্গা দেশ ছেড়ে পালিয়ে আসে।’
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার রোহিঙ্গা জনগণকে আশ্রয় প্রদানের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে। তিনি বলেন, ‘আমরা দাবি করতে পারি, আমরা তাদেরকে কেবলমাত্র আশ্রয়ই দিইনি, সেখানে যাতে কোন প্রকার সংঘর্ষ বা সহিংসতা ঘটতে না পারে সেজন্য আমরা যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করি।’
রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে আশ্রয় দেয়া হয়েছে, এ কথা পুনরুল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে কোন প্রকার দ্বন্দ্বে যায়নি। তিনি বলেন, ‘আমরা এই সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের জন্য আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এবং বিশ্বের সকল দেশ এ ব্যাপারে সাধুবাদ জানাচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, কোন ধর্মেই সংঘর্ষ বা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির স্থান নেই। কিন্তু কখনো কখনো দুর্ভাগ্যজনভাবে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়। তিনি ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে রামু, উখিয়া ও কক্সবাজারের ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘তখন আপনারা এরকম অস্থিতিশীল পরিস্থিতির শিকার হন।’
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে একটি ক্ষুধামুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ গড়তে বৌদ্ধ সম্প্রদায়সহ সকল ধর্মের লোকদের সহায়তা কামনা করেন। তিনি দৃঢ় আস্থা ব্যক্ত করে বলেন, আমরা লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হবো।-বাসস