একুইট কিডনি ইনজুরিতে (একেআই) প্রতিবছর ১ কোটি ৩৩ লাখ লোক আক্রান্ত হচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশে এর পরিমাণ ১ কোটি ১৩ লাখ। এমনই তথ্য জানানো হয় ১৩ম জাতীয় সম্মেলন ও বৈজ্ঞানিক সেমিনারে।
শনিবার কিডনি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী ১৩ম জাতীয় সম্মেলন ও বৈজ্ঞানিক সেমিনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব তথ্য তুলে ধরেন।
একুইট কিডনি ইনজুরিতে বছরে ১৭ লাখ মারা যায়। বাংলাদেশে ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ কোনো না কোনোভাবে কিডনি রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে প্রতিবছর ৩৫ থেকে ৪০ হাজার মানুষ মারা যায়।
কিডনি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক হারুন অর রশিদের সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আবদুল মালিক।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. একে আজাদ খান ও যুক্তরাজ্যের রয়াল লন্ডন হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. স্ট্যানলি ফ্যান।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, ক্রনিক কিডনি রোগের প্রধান কারণ ডায়াবেটিস। এজন্য যথাযথ চিকিৎসা ও সচেতনতা জরুরি। কিডনি রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করলে ৬০ ভাগ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব। এ রোগ প্রতিরোধে ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এছাড়াও প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটা, অতিরিক্ত লবণ পরিত্যাগ করা এবং হরহামেশা ব্যথানাশক ওষুধ ও অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করা। ফাস্টফুড, চর্বি জাতীয় ও ভেজাল খাবারসহ ধূমপান বর্জন করা জরুরি। বছরে অন্তত একবার কিডনি ফাংশন পরীক্ষা করা।
সেমিনারে বক্তরা আরো বলেন, ডায়াবেটিসের কারণে ৪০ শতাংশ ও উচ্চরক্তচাপের কারণে ২০ শতাংশ এবং ক্রনিক নেফ্রাইটিসের কারণে ২০-৩০ শতাংশ রোগী কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। দেশে ৮০ লাখ লোক ডায়াবেটিসে এবং ২ কোটি লোক উচ্চরক্তচাপে ভুগছে।
কিডনি রোগের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল- প্রথমদিকে এর কোনো উপসর্গ থাকে না। কিন্তু যখন উপসর্গ ধরা পড়ে ততক্ষণে কিডনির প্রায় ৭৫ ভাগই বিকল হয়ে পড়ে। জনসাধারণকে সচেতন করা গেলে এবং শুরুতে শনাক্ত করা সম্ভব হলে এ রোগ প্রতিরোধ অনেকাংশেই সম্ভব।