এ সময় তিনি বলেন, ‘প্রমিত বাংলা শব্দের বানান এবং উচ্চারণ সুনির্দিষ্ট। এখানে কোনো আপস চলবে না। বাংলা ভাষাকে মিশ্রিত বা বিকৃত করে বলার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘তবে আঞ্চলিক ভাষাকে কিন্তু অস্বীকার করা যাবে না। কারণ, আঞ্চলিক ভাষাও বাংলা ভাষা, এর নিজস্বতা রয়েছে। বাংলা ভাষার বৈচিত্র্য অনুসন্ধান ও আঞ্চলিক উপভাষার ভাষাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণের ওপর আরো গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।’
তিনি বলেন-ভাষা শিক্ষার মধ্যে আলাদা একটা মাধুর্য আছে। পৃথিবীতে একমাত্র মানব জাতিরই ভাষা আছে। তারাই কেবল বলতে পারে। আমাদের ভাইয়েরা রক্ত ও জীবন দিয়ে আমাদের এই ভাষা উপহার দিয়ে গেছেন। এর মর্যাদা আমাদের রক্ষা করতে হবে।
বাঙালির হাজার বছরের সংগ্রামী ইতিহাসে অমর একুশে এক উজ্জ্বল এবং মহান সংযোজন উল্লেখ করে বলেন-একুশের পথ বেয়েই আমরা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে বিজয়ী হয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জন করেছি।
তিনি বলেন, ‘এ লক্ষ্যে আমরা এ বছর প্রথমবারের মতো চাকমা, মারমা, সাদ্রী, গারো ও ত্রিপুরা এই পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ২৪ হাজার ৬৬১ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে তাদের নিজস্ব মাতৃভাষায় পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেছি। পর্যায়ক্রমে সকল নৃ-গোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষায় পাঠ্যবই তৈরি করা হবে। আমরা চাই সকল মাতৃভাষা বিকশিত হোক।’
প্রধানমন্ত্রী ‘৫২-এর ভাষা সংগ্রামের ইতিহাসকে আরো ব্যাপকভাবে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আহবান জানিয়ে বলেন, ভাষার জন্য রক্ত দেয়ার যে অনন্য নজির তার আরো প্রচার হওয়ার দরকার। বাংলাদেশের মানুষের মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য মহান ত্যাগের মহিমাকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন আমাদের জন্য সত্যিই গর্বের বিষয়।
তিনি বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি এখন শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্ববাসীর সম্পদ। বিশ্বের ১৯০টিরও বেশি দেশে আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে সমগ্র বিশ্বের মাতৃভাষা প্রেমীদের শুভেচ্ছা জানান।