জানা গিয়েছে, ৭৫টি বিমান ও প্রায় ১০০টি জাহাজ বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে প্রবেশের পরই উধাও হয়ে গিয়েছে। এই রহস্যের মৃত্যুপুরী ‘ডেভিলস ট্রায়াঙ্গেল বা শয়তানের ত্রিভূজ’ নামে বেশি পরিচিত। এই রহস্য অনেক প্রশ্নের পাশাপাশি আশঙ্কা, ভয় ও চক্রান্তের জন্ম দিয়েছে।
এটি আটলান্টিক মহাসাগরের উপর ৫ লক্ষ কিমি বর্গক্ষেত্রের একটি এলাকা। যা ফ্লোরিডা, পিওরটো রিকো এবং বারমুডার মধ্যে অবস্থিত। জানা যায়, এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল ১০০ বছরে ১০০০ জন মানুষের জীবন নিয়েছে।
বর্তমানে ‘চ্যানেল ৫’ তাদের ‘দ্যা বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল এনিগমা’ তথ্যচিত্রে দাবি করেছে, সম্ভবত এই রহস্যজনকভাবে বিমান বা জাহাজ উধাও হয়ে যাওয়ার কারণ ১০০ ফুট উচ্চতার ‘রাফ ওয়েভ’ বা ‘ভয়ঙ্কর ঢেউ।’
বিজ্ঞানের পরিভাষায় এই ‘রাফ ওয়েভ’কে বলা যায় ‘অত্যন্ত ঝোড়ো ঢেউ।’ এই ঢেউগুলো ১০০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত উপরে উঠতে পারে। ১৯৯৭ সালে প্রথম একটি স্যাটেলাইটের সাহায্যে দক্ষিণ আফ্রিকার সমুদ্র উপকুলে এই ভয়ঙ্কর ঢেউ লক্ষ্য করা যায়। এই ঢেউগুলো সম্পর্কে আগে থেকে কোনও আভাস পাওয়া যায় না।
চ্যানেল ৫ এর তথ্যচিত্রে বিজ্ঞানীরা আভ্যন্তরীণ উদ্দীপকের সাহায্যে কৃত্রিম উপায়ে একটি ভয়ঙ্কর ঢেউ তৈরি করেন।
সাউদাম্পটনের বিজ্ঞানীদের তৈরিকৃত ‘ইউএসএস সাইক্লোপস’ নামের একটি জাহাজ ১৯১৮ সালে ৩০৬ জনকে নিয়ে উধাও হয়ে যায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত জাহাজটি ১৯১৮ সালে বাহিয়া থেকে বাল্টিমোর যাওয়ার সময় এটি উধাও হয়ে যায়। এই জাহাজে থাকা ৩০৬ জন বা ভগ্নাবশেষের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
সমুদ্র বিজ্ঞানী সাইমন বক্সবল বলেন, আটলান্টিক মহাসাগরের ওপর তিনটি ভিন্ন জায়গা থেকে তিনটি ভয়ঙ্কর ঝড় আশায় ওই সময় ভয়ঙ্কর ঢেউের সৃষ্টি হয়েছিল। এই রকম ঢেউ জাহাজটিকে টুকরো টুকরো করেও দিয়ে থাকতে পারে।
বিজ্ঞানী ডঃ ক্রসজেলনেইকি বলেন, এমন নয় যে শুধুমাত্র বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলেই এই রকম ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রে উত্তর মিললেও বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্যের সমাধান হয়নি।
দ্যা ন্যাশনাল ওসিয়ানিক অ্যান্ড অ্যাট- মওস্ফোরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিজ্ঞানী ডঃ ক্রসজেলনেইকির সঙ্গে একমত হয়ে জানিয়েছেন, এই ট্রায়াঙ্গেলের সঙ্গে অন্যান্য জায়গার কোনও তফাৎ নেই। একই ধরনের বাতাস ও সমুদ্রের অবস্থান রয়েছে সেখানে।