পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ আগের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। বিজ্ঞানীরা মানুষ্য সৃষ্ট এই গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনের মাত্রা জলবায়ু পরিবর্তনে নতুন বিপত্শঙ্কা হিসেবে দেখছেন । খবর এএফপি।
যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের মৌনা লোয়া মানমন্দিরে গবেষণায় দেখা গেছে, বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা ৪১৫ দশমিক ২৬ পার্টস পার মিলিয়ন (পিপিএম)। দৈনিক হিসাবে কার্বনের মাত্রা ৪১৫ পিপিএম এর ওপরে ওঠার রেকর্ড এটাই প্রথম। ধারণা করা হয়, সর্বশেষ ৩০ লাখ বছর আগে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে এই মাত্রায় কার্বন ডাই অক্সাইড ছিল। যখন পৃথিবীর তাপমাত্রা এতটাই বেশি ছিল যে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এখনকার তুলনায় কয়েক মিটার বেশি ছিল এবং এন্টার্কটিকা মহাদেশ বনভূমিতে আচ্ছাদিত ছিল।
মৌনা লোয়া মানমন্দির ১৯৫০ এর দশক থেকে বায়ুমণ্ডলে কার্বনের পরিমান পর্যালোচনা করে আসছে। গত রোববার (১২ মে) সকালে তারা বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের সর্বোচ্চ মাত্রা রেকর্ড করে।
এ ব্যাপারে পটসডাম ইনস্টিটিউট ফর ক্লাইমেট ইমপ্যাক্ট রিসার্চের (পিআইকে) গবেষক উলফগ্যাং লুখত বলেন, এটা প্রমাণ করে যে, আমরা আদৌ জলবায়ু রক্ষায় কোনো ভূমিকা রাখতে পারছি না। বছর বছর কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা ক্রমান্বয়ে বাড়তির দিকেই যাচ্ছে। কার্বন ডাই অক্সাইড বৃদ্ধির এই অনুপাত স্থিতিশীল করা দরকার।
স্ক্রিপস ইনস্টিটিউশন অব ওশানোগ্রাফির কার্বন ডাই অক্সাইড প্রোগ্রামের পরিচালক রাফ কেলিং বলেন, কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বৃদ্ধির এই প্রবণতা সম্ভবত অব্যাহত থাকবে ২০১৯ সালজুড়েই। একটাকে এল-নিনো বছরের সঙ্গে তুলনা করা চলে। এল-নিনো বলতে বুঝায়, উষ্ণ সমুদ্রের স্রোতের প্রভাবে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি।
তিনি আরো বলেন, গত বছর কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বৃদ্ধির পরিমান ছিল তিন পিপিএম। বর্তমানে এ বৃদ্ধির পরিমাণ গড়ে ২ দশমিক ৫ পিপিএম।
যদিও বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের নিরাপদ মাত্রা নিয়ে কিছু মতবিরোধ রয়েছে। তারপরও অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের ধারণা, বাতাসে কার্বনের মাত্রা ৩৫০ পিপিএম থাকলে তা নিরাপদ, যা সর্বশেষ ১৯৮০ এর দশকে ছিল।