ডিএমপি নিউজঃ নিরাপত্তাকে অক্সিজেনের সঙ্গে তুলনা করে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার) বলেছেন, ‘নিরাপত্তা ছাড়া গ্রাম শহর হবে না। এ জন্য আমরা বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে পুলিশি সেবা গ্রামে পৌঁছে দিয়েছি। দেশকে ৬ হাজার ৯১২টি বিটে ভাগ করে বিট পুলিশিং চালু করা হয়েছে।
রাজধানীর রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে ১৫ মার্চ (মঙ্গলবার) সকালে পুলিশ নির্মিত প্রথম গ্রাফিক নভেল ‘দুর্জয়ের ডায়েরি’ এবং অ্যানিমেটেড ফিল্ম সিরিজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আইজিপি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন অতিরিক্ত আইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) এম খুরশীদ হোসেন। এসময় অ্যাডিশনাল আইজি (এঅ্যান্ডও) ড. মোঃ মইনুর রহমান চৌধুরী, বিপিএম (বার); ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম, বিপিএম(বার); র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বিপিএম(বার), পিপিএম এবং বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের সভাপতি ও এসবি’র অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক মোঃ মনিরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) এবং বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজি, ঢাকাস্থ বিভিন্ন পুলিশের ইউনিট প্রধান এবং ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ঢাকার বাহিরে সকল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার পুলিশ সুপারগণ ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।
আইজিপি বলেন, বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছর দেশ পরিচালনাকালে এমন কোনো দিক নেই যা নিয়ে তিনি কাজ করেননি। বঙ্গবন্ধু প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে থানা (পুলিশ স্টেশন) করার পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন স্বাধীনতা-পরবর্তী পুলিশ কলোনিয়াল পুলিশ হবে না; পুলিশ হবে জনবান্ধব, গণবান্ধব। বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, প্রতিটি গ্রাম হবে শহর। গ্রামেই মানুষ শহরের সুবিধা পাবেন।
বিট পুলিশিংয়ের সফলতার কথা তুলে ধরে আইজিপি বলেন, পুলিশের সেবাকে জনগণের নিকট পৌঁছে দিতে সারাদেশে ৬ হাজার ৯১২টি বিট পুলিশিং ইউনিট চালু আছে। বিট পুলিশিংয়ের ফলে থানাগুলোতে বছরে প্রায় ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার মামলা কমে গেছে।
দুর্জয়ের ডায়েরির প্রাসঙ্গিকতা উল্লেখ করে পুলিশ প্রধান বলেন, গ্রাফিক নভেলের মাধ্যম খুব দ্রুত জনগণের কাছে পৌঁছানো যায়। কার্টুন চরিত্র ‘মীনা’ এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। দুর্জয়ের ডায়েরিতে গ্রাফিকসের মাধ্যমে একদিকে জনগণ বিট পুলিশিং সেবা সম্পর্কে জানতে পারবেন, আবার বিট পুলিশিং কর্মকর্তারাও তাঁদের দায়িত্ব সম্পর্কে অবহিত হবেন।
আইজিপি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন ঘটনা, সমস্যা, তথ্য, এজেন্ডাভিত্তিক সিরিজের প্রথম খন্ড বের করেছি। পরবর্তী সময়ে এ ধরনের আরও সিরিজ বের করা হবে।’
এর আগে আইজিপি অন্যান্য অতিথিকে সঙ্গে নিয়ে দুর্জয়ের ডায়েরির মোড়ক উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে দুর্জয়ের ডায়েরির গল্পের ওপর ভিত্তি করে অ্যানিমেটেড ফিল্ম প্রদর্শিত হয়। অ্যানিমেটেড ক্যারেক্টার দুর্জয় ‘দুর্জয়ের ডায়েরি’র মূল চরিত্র। পুলিশ সাব-ইন্সপেক্টর ইফতেখার আহমেদ দুর্জয় একজন বিট পুলিশ কর্মকর্তা। তাঁর সহকর্মী সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর নাজনীন নাহার শাপলা। প্রতিদিন দূরবর্তী এলাকা থেকে সাধারণ মানুষ নানা সমস্যা নিয়ে আসে দুর্জয়ের কাছে। তিনি উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলি লিখে রাখেন ডায়েরিতে। সহকর্মীদের নিয়ে মানুষের সমস্যার সমাধান করছেন। বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে এভাবেই জনগণের মাঝে নিরন্তর পুলিশি সেবা পৌঁছানো হচ্ছে।
বাংলাদেশ পুলিশের মাল্টিমিডিয়া অ্যান্ড পাবলিসিটি উইংয়ের এআইজি মো. কামরুজ্জামান সম্পাদিত বিট পুলিশিংকে উপজীব্য করে নির্মিত গ্রাফিক নভেল ‘দুর্জয়ের ডায়েরি’ বইয়ে ১০টি গল্প স্থান পেয়েছে। এগুলো হলো ‘ছিনতাই নির্মূলে বিট পুলিশ’, ‘বখাটেদের তথ্য দিলেই প্রতিরোধ করবে পুলিশ’, ‘মাদক বিক্রেতার তথ্য দিলে মাদকমুক্ত সমাজ হবে’, ‘চুরি প্রতিরোধে পাশে আছে বিট পুলিশ’, ‘সামাজিক উপদ্রবের শিকার হলে প্রতিকার দেবে বিট পুলিশ’, ‘হার মানব না চাঁদাবাজদের কাছে, বিট পুলিশ পাশেই আছে’, ‘উঠান বৈঠক’, ‘বিদেশে থেকেও বিট পুলিশকে পাশে পাবেন’, ‘কেউ কোথাও হারিয়ে গেলে সহায়তা করবে পুলিশ’ এবং ‘নাশকতা রোধে সদা সতর্ক বিট পুলিশ’।