পটুয়াখালীর পায়রায় একশ’ একর জমির ওপর ৩ হাজার ৬শ’ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে জার্মানির সিমেন্স এজির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি।
রোববার রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে এই চুক্তি সই হয়। প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) নির্ভর এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি হবে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র। ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ের এই প্রকল্পের ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন আসবে ঋণ থেকে। বাকি ৪০০ মিলিয়ন ডলার থাকবে ইক্যুইটি হিসেবে।
সিমেন্সের দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সুনীল মাথুর এবং নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ.এম খোরশেদুল আলম সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
অনুষ্ঠানে ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে এটাই ইউরোপের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ। নসরুল হামিদ বিপু বলেন, সরকারের লক্ষ্য কম মূল্যে গ্রাহককে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ প্রদান। সে লক্ষ্য পূরণেই বিভিন্ন ধরনের জ্বালানির বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করা হচ্ছে। কক্সবাজারের মহেশখালিতে সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াটের আরও একটি এলএনজিনির্ভর বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপনের বিষয়ে সিমেন্সের সঙ্গে চুক্তি করা হবে বলে জানান বিপু।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে পায়রায় চীনের একটি কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার; যার ২৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। পায়রায় কয়লাভিত্তিক ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গেই নতুন এ কেন্দ্রের জন্য ১০০ একর জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। ৩৬০০ মেগাওয়াটের এ বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১২০০ মেগাওয়াটের মোট তিনটি ইউনিট থাকবে। আমদানি করা এলএনজি এ কেন্দ্রে কীভাবে আনা হবে তা নিয়ে সমীক্ষা চলছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
জার্মানির প্রতিষ্ঠান সিমেন্স দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশে ভৌত অবকাঠামোসহ স্বাস্থ্য, শিল্পখাতে কাজ করে আসছে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে পায়রা ও এর আশপাশে ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়নের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সেখানে একটি বন্দরও করা হয়েছে; যেটাকে গভীর সমুদ্র বন্দর করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে সরকার। এছাড়া পায়রার আশেপাশে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলারও কাজ শুরু হয়েছে।