বিমান দূর্ঘটনার মধ্যদিয়েই চলে বিমান ভ্রমন। এক দেশে থেকে অন্য দেশে সহজে ও দ্রুত যেতে বিমানের দরকার হয়। বিমানে ভ্রমনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরী বিষয় এর নিরাপত্তা। নিরাপদভাবে উড্ডয়ন ও নামাটায় রয়েছে পাইলটের স্বার্থকতা। নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দের কথা আমরা ভুলিনি। ভুলিনি প্রায় ৫০ জন যাত্রীর মৃত্যুর কথা। নেপালের মত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রয়েছে ভয়ংকর বিমানবন্দর। ইন্টারনেট অবলম্বনে এমনই ১৭ টি ভয়ংকর বিমানবন্দরের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে ডিএমপি নিউজ।
যুক্তরাজ্যের জিব্রাল্টার বিমানবন্দর। এর খুব কাছেই জিব্রাল্টার পাথরের অবস্থান। তাই অবতরণের সময় মাথা ঠান্ডা রাখতে হয় বিমানের চালককে। শুধু তাই নয়। বিমানবন্দরের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে একটি রাস্তা। তাই বিমান অবতরণের জন্য ট্রাফিক সিগন্যালে আপনাকে দাঁড়িয়েও থাকতে হতে পারে।
নেপাল ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ঘন পাহাড়ের বেষ্টনিতে রয়েছে এই বিমান বন্দরটি। পাইলটের একটু ভুলেই হতে পারে মারাত্মক বিপদ। বিমান বন্দর প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৭০ এর অধিক দূর্ঘটনায় প্রায় ৭ শত মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
আটলান্টিক সাগরের তীর ঘেঁষে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের সেইন্ট মার্টিন দ্বীপের ডাচ অংশে অবস্থিত প্রিন্সেস জুলিয়ানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এর রানওয়ে স্থানীয় সমুদ্রতীরের এতটাই কাছে যে বিমানকে তীরের কাছাকাছি এসে অনেকটা নিচু দিয়ে যেতে হয়।
হিমালয়ে যেতে হলে আপনার এই লুকলা বিমানবন্দর হয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। নেপালের পূর্বে অবস্থিত এই বিমানবন্দরটি ৯ হাজার ৩৩৪ ফুট পাহাড়ের ওপর অবস্থিত। এর রানওয়ে অন্য সব বিমানবন্দরের মতো সমতল নয়। বিমানকে ধীরগতির করতে ও যথাসময়ে ব্রেক করার জন্য এর রানওয়ে ঢালু করে তৈরি করা হয়েছে।
সুইডেনের রাজা তৃতীয় গুস্তাফের নাম অনুযায়ী এর নাম রাখা হয় তৃতীয় গুস্তাফ বিমানবন্দর। দুই হাজার ১৩৩ ফুট রানওয়েতে শুধু ছোট এয়ারক্রাফটকে জায়গা করে দেওয়া হয়। তবে এর পাশে পাহাড়বেষ্টিত থাকায় অবতরণের সময় প্রায়ই বিমানগুলোকে পাহাড়ের মুখোমুখি হতে হয়। ২০১৬ সালে ইউটিউবে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায় পাহাড়ের গায়ে ধাক্কা লাগতে গিয়ে অল্পের জন্য বেঁচে যায় একটি এয়ারক্রাফট।
নেদারল্যান্ডের অধিভুক্ত দ্বীপ আরুবার মন্ত্রী জুয়ানকো ই. ইরাউসকুইনের নামানুসারে নতুনভাবে রাখা হয়েছে বিমানবন্দরটির নাম। প্রথমে এর নাম ছিল সাবা বিমানবন্দর। শুধু বাণিজ্যিক এয়ারক্রাফটদের জন্যই নির্মাণ করা হয়েছে বিমানবন্দরটি। এতে এক হাজার ৩১২ ফুট রানওয়ে রয়েছে। যা পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট দৈর্ঘ্যের রানওয়েগুলোর মধ্যে একটি।
ভারতের উপকূলে আগাত্তি দ্বীপে অবস্থিত এই বিমানবন্দরটি। ১৯৮৮ সালে নির্মিত এই বিমানবন্দরে বড় কোনো বিমানের অবতরণের সুযোগ নেই। আকাশ থেকে দেখলে শুধু এর চার হাজার ২৩৫ ফুটের রানওয়েটাই চোখে পড়বে আপনার। তবে এর সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির কাজ চলছে।
ভুল করার কোনো সুযোগ নেই। একটি এদিক সেদিক হলেই আপনি হারিয়ে যাবেন ফ্রেঞ্চ পর্বতের বরফের মাঝে। কিন্তু যদি আপনি সঠিকভাবে অবতরণ করেন তাহলে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে সুউচ্চ অবকাশ যাপন কেন্দ্র।
পশ্চিম চীনের তিব্বত মালভূমির কাছে অবস্থিত কামাদো বিমানবন্দর। এর রানওয়ে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৪ হাজার ২১৯ ফুট উপরে অবস্থিত। যা যেকোনো পাইলটকে বিপদে ফেলার জন্য যথেষ্ট। বিপদ এড়াতে তাই রানওয়েকে ১৮ হাজার ফুট লম্বা করা হয়েছে।
নিউজিল্যান্ডের নর্থ আইল্যান্ডে অবস্থিত আঞ্চলিক বিমানবন্দর এটি। এর আগে বিমানবন্দরের রানওয়ের মাঝখান দিয়ে গাড়ির রাস্তা যাওয়ার কথা শুনেছেন। এই বিমানবন্দরের মাঝখান দিয়ে গেছে আস্ত এক রেললাইন।
ভুটানে অবস্থিত এই বিমানবন্দরটিও লুকলার মত হিমালয়ে পৌঁছানর অন্যতম পথ। ভূপৃষ্ঠ থেকে এটি ৭,৩৩২ ফুট উপরে অবস্থিত। আর পাহাড়ের শিখর থেকে এটি ১৮,০০০ ফুট নিচে অবস্থিত।
ইকুয়েডরের কুইটোতে অবস্থিত ওল্ড ম্যারিসকাল সুকরে ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। ইকুয়েডরের সবচেয়ে ব্যস্ত বিমানবন্দরই শুধু নয় এটি বিপজ্জনকও বটে। চারিদিকে পাহাড়বেষ্টিত এর রানওয়েটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০ হাজার ফুট ওপরে অবস্থিত।
নিরাপত্তার দিক দিয়ে হন্ডুরাসের টনকোনটিন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট যথেষ্ট বিপজ্জনক। ছোট রানওয়ের কারণে ২০০৮ সালে একটি এয়ারবাসে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। ফলে সব আন্তর্জাতিক বিমানের উড্ডয়ন ও অবতরণ বাতিল ঘোষণা করা হয়।
নিউজিল্যান্ডের ওয়েলিংটন শহরের কেন্দ্র থেকে তিন মাইল দূরে অবস্থিত বিমানবন্দরটি। সমুদ্রের খুব কাছাকাছি হওয়ায় বিমান চালকদের জন্য এটি যথেষ্ট বিপজ্জনক। এর ছয় হাজার ৮২৭ ফুট লম্বা রানওয়েও ছোট বিমানকে যথেষ্ট জায়গা করে দিতে পারে না।
দেখলেই বোঝা যাচ্ছে বরফের তৈরি বিমানবন্দর এটি। আর এই বিমানবন্দর তৈরি করা হয়েছে বরফের রাজ্য এন্টার্কটিকায়। বছর দুই আগে লফলেইডার আইসল্যান্ডিক বোয়িং ৭৫৭ প্রথমবারের মতো অবতরণ করে বিমানবন্দরটিতে।
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের একটি গলফ কোর্সের ভেতর অবস্থিত বিমানবন্দরটি। দুটি রানওয়ে রয়েছে বিমানবন্দরটিতে। যখন বিমান অবতরণ করে তখন গলফ খেলোয়াড়দের অপেক্ষা করতে হয় রানওয়ের ওপারে যাওয়ার জন্য।
ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর জন্মস্থান পর্তুগালে অবস্থিত মেডিয়েরা এয়ারপোর্ট। পর্তুগালের চতুর্থ ব্যস্ত বিমানবন্দরের রানওয়েটা যথেষ্ট বিপজ্জনক। মূল রানওয়ের সঙ্গে লেগে রয়েছে বাতিল হয়ে যাওয়া রানওয়েটি। যার পথটি লেগে রয়েছে সমুদ্রে।