জাতিসংঘের রিপোর্ট বলছে বিশ্বে লক্ষ লক্ষ মানুষ আছে যাদের কোন পরিচয় নেই। সরকারিভাবে তারা ‘নেই’-এর দলে ৷ গোটা বিশ্বে সরকারি খাতায় নাম নেই এমন মানুষের অস্তিস্ত্ব মূলত আফ্রিকা ও এশিয়ায় ছড়িয়ে৷
হাতে কোনও পরিচয় পত্র নেই ৷ ফলে নিজেদের অস্তিত্ব প্রমাণ করারও কোনও রাস্তা নেই এঁদের সামনে৷ তাই যাবতীয় সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা ৷ পাচ্ছেন না শিক্ষা বা স্বাস্থ্য পরিষেবা, তাদের জন্য দেশের কোনও দায় নেই, দায় নেই সমাজেরও ৷ ফলে এদের মধ্যে বাড়ছে অসামাজিক কাজকর্মের প্রবণতা ৷ এমনই সতর্কবার্তা জাতিসংঘের ৷ নামপরিচয়হীন এইসব মানুষগুলোর সংখ্যা ক্রমশ বাড়চে কারণ এদের নবজাতকদেরও কোনও জন্মনথিভুক্তিকরণ হচ্ছে না ৷
সশস্ত্র সংঘর্ষ, মহামারি, দারিদ্র্যের সঙ্গে যুঝে এরা বেঁচে আছে নিত্যদিন ৷ গবেষণা অনুযায়ী বর্তমানে পৃথিবীর জনসংখ্যা প্রায় ৭শ’ কোটি ৷ তার মধ্যে ১১০ কোটি মানুষ পরিচয়হীন হয়ে বেঁচে আছে আজও। যাদের অধিকাংশই এশিয়া ও আফ্রিকার বাসিন্দা। পরিচয় না থাকায় স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আর্থসামাজিক সুবিধা থেকে এরা বঞ্চিত, এমন রিপোর্ট পেশ করেছে বিশ্বব্যাংকও। অন্যদিকে, সরকারি নথিতে এই অদৃশ্য মানুষদের এক তৃতীয়াংশই শিশু বলে জানাচ্ছে জাতিসংঘ ৷
সম্বলহীন এই সব মানুষদের দারিদ্র থেকে মুক্তি দিতে, নতুন ডিজিটাল আইডেন্টিফিকেশন প্রোগ্রাম চালু করা হচ্ছে। পাশাপাশি সিভিল রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চালু করার ভাবনাও রয়েছে। এই জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার৷ বরাদ্দ করেছে বিশ্বব্যাংক।
প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এত কোটি মানুষকে সমাজের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হচ্ছে। এমনই জানিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের মুখ্য কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা ক্রিস্টালিনা জর্গিয়েভা। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আর্থসামাজিক সুব্যবস্থা ফিরিয়ে দিতে এই উদ্যোগ সফল হবে বলেই তিনি মনে করেন।