করোনা মহামারি শুরু হওয়ার আগে ইউনিসেফ জানিয়েছিল বিশ্বে প্রতি ছ’টি শিশুর মধ্যে এক জন, কিংবা আরও স্পষ্ট হিসেব দিলে, ৩৫ কোটি ৬০ লক্ষ শিশু চরম দারিদ্রের মধ্যে রয়েছে। সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক গ্রুপ এবং ইউনিসেফের একটি নতুন সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, আরও করুণ হয়েছে পরিস্থিতি। আরও চরমে পৌঁছেছে শিশুদের দারিদ্র।
নতুন রিপোর্ট— ‘গ্লোবাল এস্টিমেট অব চিলড্রেন ইন মানিটারি পভার্টি: অ্যান আপডেট’-এ জানানো হয়েছে, সাব-সাহারান আফ্রিকায় দুই-তৃতীয়াংশ শিশুর পরিবারে মাথাপিছু আয় দিনে ১.৯০ ডলার বা তারও কম। দক্ষিণ এশিয়ার এর থেকে ভাল পরিস্থিতি। কিন্তু সেখানে পাঁচটি শিশুর মধ্যে এক জন এই দৈন্যদশায়।
রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ২০১৩ থেকে ২০১৭, এই চার বছরে অর্থাভাবে থাকা শিশুর সংখ্যা অনেকটাই কমেছিল। কমপক্ষে ২ কোটি ৯০ লক্ষ শিশুর আর্থিক পরিস্থিতির কিছুটা হলেও উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু গত কয়েক মাসে টানা গৃহবন্দি দশায় গোটা বিশ্বের অর্থনীতি কার্যত ভেঙে পড়েছে। আর তারই সঙ্গে ফের পুরনো চেহারায় ফিরে আসছে শিশু-দারিদ্রও। কোথাও কোথাও অবস্থা আগের থেকেও খারাপ। এই শিশুদের মধ্যে ২০ শতাংশ পাঁচেরও কম বয়সি। এবং বেশির ভাগই উন্নয়নশীল দেশগুলির বাসিন্দা।
ইউনিসেফের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘‘ছ’টি শিশুর মধ্যে এক জন চরম দারিদ্রে মানে, সে বাঁচতে চেয়েই লড়ছে। মোট সংখ্যা তো শিউরে ওঠার মতো। বিশ্বে একটা বড় সংখ্যক শিশুর আর্থিক অবস্থা এমনিতেই খারাপ ছিল। মহামারি দুর্গতি আরও বাড়িয়েছে।’’
এ দিকে ফের গৃহবন্দি হতে চলেছে ইউরোপ। অর্থনীতি স্বাভাবিক রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন দেশের সরকার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছে, এ সপ্তাহে সংক্রমণে ফের রেকর্ড গড়েছে মহাদেশটি। এক সপ্তাহে আক্রান্ত ৯ লক্ষ ৭২ হাজার। নিশ্চিত সংক্রমণ অন্তত ২৫% বেড়ে গিয়েছে ইউরোপে। বিশ্বের নয়া সংক্রমণের অন্তত ৩৮% ইউরোপে। এর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি সংক্রমিত রাশিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র এবং ইটালিতে। স্লোভেনিয়ার মতো ছোট দেশে এক সপ্তাহে সংক্রমণ বেড়েছে ১৫০%।
ইউরোপে সংক্রমণ ও মৃত্যুতে সব চেয়ে এগিয়ে ব্রিটেন। ৭ কোটি ৬২ লক্ষ আক্রান্ত। মৃত ৪৩,৯৬৭ জন। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই কড়াকড়ি শুরু করেছে বরিস জনসনের সরকার। ফের লকডাউনের কথাও ভাবছে তারা।