বর্ষা মৌসুমের আগে বৃষ্টির কারণে আবারও শুরু হয়েছে ডেঙ্গুজ্বর। প্রতিদিন ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে ১২৮জন। কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের মতে, বৃষ্টির কারনে ডেঙ্গুজ্বরের বাহক অ্যাডিশ মশার প্রজনন ও উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অ্যাডিশ মশার প্রজনন স্থল ধ্বংস না করলে ডেঙ্গুজ্বর আরও বাড়তে থাকবে।
মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুম থেকে জানা গেছে, চলতি বছর বিভিন্ন সময় থেমে থেমে বৃষ্টি ও যত্রতত্র পরিস্কার পানি জমে থাকার কারণে ডেঙ্গুজ্বরের বাহক অ্যাডিশ মশার প্রজনন ও উপদ্রব বাড়ছে। প্রতিদিন ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তাই মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ এই বছর আগে থেকে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীর তথ্য সংগ্রহ করছেন। গত তিন দিনে ৫ জন রোগী ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে । বৃষ্টি ও বন্যার কারণে এই সংখ্যা দিন দিন বাড়বে।
মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিনিয়র কীটতত্ত্ববিদ রেজাউল করিম খান বলেন, থেমে থেমে বৃষ্টি হয়। আর বর্তমান তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা অ্যাডিশ মশা প্রজননের জন্য উপযোগী। তাপমাত্রা ২৩ থেকে ২৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস ও বায়ুমন্ডলের আর্দ্রতা ৭০ থেকে ৮০ ডিগ্রী হওয়ায় ডেঙ্গুজ্বরের বাহক অ্যাডিশ মশা বংশ বিস্তারের এখন উপযুক্ত সময়।
তবে যে সব এলাকায় নতুন নতুন ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। নির্মানাধীন ওই সব ভবনের পানির রিজর্ভ ট্যাংকে মশা বংশ বিস্তার করে। পুরনো টায়ার,বাড়িতে বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা পানিতে অ্যাডিশ মশার প্রজনন হয়। ৩ থেকে ৫ দিন জমে থাকা পানি ফেলে দিয়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। অ্যাডিশ মশা থেকে বাঁচার জন্য দিনের বেলায়ও মশারির নিচে ঘুমাতে হবে। আর ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হলে নিকটস্থ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা দিতে হবে।
মহাখালী রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডাঃ মোস্তাক হোসেন বলেন, ডেঙ্গুজ্বর হলে বেশী করে পানি ও তরল খাবার খেতে হবে। আর ডেঙ্গুজ্বরের লক্ষণ শরীর ও মাথায় তীব্র ব্যাথা ও গায়ে লালচে রং ধারণ করলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। সব সময় মশারী টানিয়ে ঘুমাতে হবে। বিশেষ করে ভোর বেলায় শিশুদেরকে মশারী টানিয়ে নিচে শুইতে দিতে হবে।