পানি, শুধু পানিতে ভাসছে এই সৌরমণ্ডলের আরও দু’টি চাঁদ। ‘গুরুগ্রহ’ বৃহস্পতিই শেষমেশ দেখাল আলোর দিশা! বোধহয় একেই বলে গুরুকৃপা! আদিগন্ত, অতলান্ত পানিতে ভেসে যাচ্ছে বৃহস্পতির দুই চাঁদ ‘ইউরোপা’ আর ‘গ্যানিমিদ’।
যত সমুদ্র আর যত অতলান্ত মহাসাগর রয়েছে পৃথিবীতে, তার অনেক অনেক গুণ বেশি সমুদ্র আর মহাসাগরে ভেসে যাচ্ছে বৃহস্পতির ওই দুই চাঁদ। তরল পানিতে টইটম্বুর ইউরোপা আর গ্যানিমিদ। পৃথিবীর গভীরতম প্রশান্ত মহাসাগরের চেয়েও অন্তত ১০০ গুণ বেশি গভীর মহাসাগর রয়েছে বৃহস্পতির চাঁদ ইউরোপায়। সুবিশাল সমুদ্র আর মহাসাগরে ভেসে যাচ্ছে বৃহস্পতির অন্য চাঁদ গ্যানিমিদেরও অন্তর-অন্দর। এত পানি পৃথিবী দেখেনি কখনও। আর সেই তরল পানির মহাসাগরগুলি ঢাকা রয়েছে পুরু বরফের চাদরে। বিশাল বিশাল সমুদ্র আর মহাসাগরে ভেসে যাচ্ছে শনির দুই চাঁদ ‘টাইটান’ আর ‘এনসেলাডাস’ও। তবে সেই মহাসাগরগুলি ভাসছে তরল হাইড্রোকার্বনে। মিথেন ও ইথেনের সাগর, মহাসাগর।
আজ, বৃহস্পতিবার রাতে সরকারি ভাবে এই ঘোষণা করবে নাসা। পৃথিবীর বাইরে এই সৌরমণ্ডলের আরও দু’টি গ্রহের চাঁদে সুবিশাল মহাসাগরের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছে নাসা। ওয়াশিংটনে নাসার সদর দফতরে সেই ঘোষণা করা হবে আজ ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায়। ওয়াশিংটনে নাসার সদর দফতর থেকে আনন্দবাজারকে এই খবর দিয়ে জানানো হয়েছে, ‘‘হাবল স্পেস টেলিস্কোপ ও শনিতে পাঠানো নাসা ও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির (ইএসএ বা ‘এসা’) মহাকাশযান ‘ক্যাসিনি-হাইগেন্স’ যে সব ছবি ও তথ্যাদি পাঠিয়েছে, তা গত তিন বছর ধরে খতিয়ে দেখে ও বিশ্লেষণ করে বৃহস্পতির দুই চাঁদ ইউরোপা ও গ্যানিমিদে তরল জলের সুবিশা়ল, অতলান্ত মহাসাগরের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। সুনিশ্চিত হওয়া গিয়েছে শনির দুই চাঁদ টাইটান ও এনসেলাডাসের সুবিশাল হাইড্রোকার্বনের সমুদ্র সম্পর্কেও।’’
নাসার সদর দফতরে ‘জেমস ওয়েব অডিটোরিয়ামে’ আজ রাতের সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির থাকবেন নাসার সায়েন্স মিশন ডাইরেক্টরেটের অ্যাসোসিয়েট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর টমাস ঝুরবুশেন, প্ল্যানেটরি সায়েন্স ডিভিশনের অধিকর্তা বিশিষ্ট জ্যোতির্বিজ্ঞানী জেমস (জিম) গ্রিন। সিনিয়র অ্যাস্ট্রোবায়োলজিস্ট মেরি ভয়টেক, নাসার জেট প্রোপালসান ল্যাবরেটরির (জেপিএল) ক্যাসিনি প্রোজেক্ট সায়েন্টিস্ট লিন্ডা স্পিলকার, দুই জ্যোতির্বিজ্ঞানী হান্টার ওয়েতে ও ক্রিস গ্লেন এবং বাল্টিমোরের স্পেস টেলিস্কোপ সায়েন্স ইনস্টিটিউটের জ্যোতির্বিজ্ঞানী উইলিয়াম স্পার্কস।