পরনে হিজাব, হাতে ব্যাট, স্কুটিতে চেপে কলেজে যাচ্ছে মেয়ে। কাশ্মীরের বারামুলায় এই দৃশ্য দেখলে চোখ কপালে ওঠে অনেকেরই। নালিশ যায় বাবার কাছে। মেয়ের এত সাহস হয় কি করে? কিন্তু বাবা বলেন, ‘কুছ তো লোক কহেঙ্গে, লোগো কা কাম হ্যায় কেহনা। ‘ এই মেয়েই বিপ্লব করছেন উপত্যকায়। কতটা সফল হবেন জানা নেই, তবে লড়াইটা জারি আছে।
কাশ্মীরের সেই কলেজছাত্রীর নাম ইনশা। ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ ছিল বরাবরই। কিন্তু, সমাজের বেড়াজাল ভেঙে আর স্বপ্ন সত্যি করা হয়ে উঠছিল না। অবশেষে এক শিক্ষকের উৎসাহে সেই স্বপ্ন সত্যি করতে চলেছেন ইনশা। নিজের চেষ্টায় মহিলা কলেজের একটি ক্রিকেট টিমও বানিয়ে ফেলেছেন ইনশা। তাঁর মুখে একটাই কথা, ‘বেখফ আজাদ রেহনা হ্যায় মুঝে’। শুধু টিম গঠনই নয়, গত সপ্তাহে সেই টিম নিয়ে ইন্টার ইউনিভার্সিটি ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশিপে খেলেও এসেছে বারামুলা গভর্মেন্ট উইমেন কলেজের ছাত্রীরা।
ইনশা যখন ব্যাট করে, তখন তার মাথা থেকে হিজাব সরে না। আবার অল রাউন্ডার রাবেয়ার শরীর ঢাকা থাকে বোরখায়। এভাবেই পাথর ছোঁড়া আর গুলির শব্দে বিধ্বস্ত কাশ্মীরে ট্রেন্ড তৈরি করছে একদল তরুণী।
মেয়েদের এই ক্রিকেটে সহযোগিতা করতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্যাম্পেনও শুরু হয়। কিন্তু সেখানে পুরুষ প্রধান সমাজের ঘৃণ্য কমেন্টে ভরে যায়। এরপর কলেজের অধ্যক্ষের সাহায্য নিয়ে টিম গঠন করে তারা। দু’জন ফিটনেস ট্রেনারকে নিয়ে আসেন জাতীয় স্তরের ক্রিকেটার ইনশা। এরপর ছিল বাবা-মায়েদের অনুমতি। অনেকে বলেন, বোরখা কিংবা হিজাব পরলে তবেই খেলার অনুমতি মিলবে। তাতেই রাজি হয়ে যান ইনশা, রাবেয়ারা। এমনকি গ্রুপ ফটো তোলার সময় সেখান থেকে বেরিয়ে যান রাবেয়া, কারণ ধর্মে ছবি তোলার অনুমতি নেই। রাবেয়া জানেন, হয়ত একদিন তাঁকে ক্রিকেট ছাড়তে হবে। তবে উদাহরণ তৈরি করেই যাবেন, এই ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তিনি।