ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের একটি টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ভারতীয় জাল রুপি, জাল রুপি তৈরীর সরঞ্জামাদি ও মূলহোতাসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। গত ৩১ জুলাই ১৯ তারিখ বিকাল অনুমান ১৮.০০ টায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল এলাকার একটি আবাসিক ভবন হতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- লিয়াকত হোসেন ওরফে জাকির, মোছাঃ শান্তা আক্তার ও মোছাঃ মমতাজ বেগম। এ সময় তাদের হেফাজত হতে ভারতীয় ২০০০ টাকা মূল্যমানের সর্বমোট ২৬ লক্ষ জাল রুপির নোট এবং জাল রুপি তৈরির কাজে ব্যবহৃত ১টি ল্যাপটপ, ০১ টি কালার প্রিন্টার, ১টি লেমিনেশন মেশিন, জাল রুপি তৈরির বিপুল পরিমাণ কাগজ, প্রিন্টারে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের কালির কার্টিজ, সিকিউরিটি সিল সম্বলিত স্ক্রীন বোর্ড, গাম ও ভারতীয় জাল রুপি বানানোর জন্য ব্যবহৃত সিল মারা ফয়েল পেপার উদ্ধার করা হয়।
আজ (১ আগস্ট) বেলা ১২টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোঃ আবদুল বাতেন বিপিএম, পিপিএম।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ডিবি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা আসন্ন কোরবানির ঈদে পোশাক ও গরু আমদানির কাজে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে জাল ভারতীয় রুপি পাচার করে আর্থিকভাবে লাভবান হবার উদ্দেশ্যে সক্রিয় হয়। চক্রটির মূল হোতা লিয়াকত হোসেন ওরফে জাকির। সে বিভিন্ন স্থান হতে জাল রুপি তৈরির প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সরবরাহ এবং প্রস্তুতকৃত জাল ভারতীয় রুপি দেশের সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের আগ্রহী ব্যবসায়ীদের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করত। শান্তা আক্তার ও মমতাজ বেগম জাল রুপি তৈরীর দক্ষ কারিগর ছিল। তারা জাল ভারতীয় রুপির সাথে আসল রুপির পার্থক্য খুব সূক্ষপর্যায়ে নামিয়ে আনতে আরো সুচারুরূপে প্রায় নির্ভুলভাবে জাল রুপি তৈরী করত। প্রায় ১০ বছর যাবত নোট জালিয়াতির সাথে যুক্ত এই চক্রটি।
তিনি আরো বলেন, প্রথম দিকে এই চক্রটি বাংলাদেশি নোট জালয়াতিতে যুক্ত থাকলেও সম্প্রতি ভারতীয় রুপি জালিয়াতিতে যুক্ত হয়। তারা গ্রেফতার এড়াতে বারবার বাসা পরিবর্তন করত । কোন বাসাতেই ২/৩ মাসের বেশি থাকত না। তারা বাসা ভাড়া নেয়ার ক্ষেত্রে বহুতল ভবনের উপরের দিকের ফ্ল্যাটই বেছে নিত, কেননা উপরের দিকের ফ্ল্যাটে লোক যাতায়াত কম থাকে। সম্প্রতি শেষ হওয়া ডিএমপি’র উদ্যোগ ‘নাগরিক তথ্য সংগ্রহ সপ্তাহ’ তে পুলিশের সক্রিয় নজরদারি বাড়ার কারণে এই চক্রটি মাত্র ৩ দিনের মাথায় একটি নতুন বাসা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগরসহ দেশের বিভিন্ন থানায় জাল নোট সংক্রান্তে একাধিক মামলা রয়েছে। বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগ করে জামিনে বের হয়ে তারা আবারো নোট জালিয়াতির কাজে লিপ্ত হয়।