ভারতের মাটির তলায় জলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ইউরেনিয়াম। অন্তত ১৬টি রাজ্যে এমন নমুনা পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। WHO নির্ধারিত নিরাপদ মাত্রার থেকে অনেকটাই বেশি রয়েছে সেই ইউরেনিয়াম।
এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি লেটার্স ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক জার্নালে বলা হয়েছে, ভারতের ১৬ টি রাজ্যের ভূগর্ভস্থ জলে ব্যাপক মাত্রায় ইউরেনিয়াম দূষণের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।
আমেরিকার ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এই তথ্য প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলছেন, এদেশের ভূগর্ভস্থ জলে বরাবরই ইউরেনিয়াম থাকলেও ইদানিং দ্রুত হারে সেই ইউরেনিয়াম ছড়াচ্ছে। তাঁরা ভারতের ১৬ টি রাজ্যের ভূগর্ভস্থ জল এবং রাজস্থান ও গুজরাতের ৩২৪ টি কূপ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন। ডব্লিউএইচও বা হু ভারতবর্ষের ক্ষেত্রে যে প্রতি লিটার জলে ৩০ মাইক্রোগ্রাম ইউরেনিয়ামের নিরাপদ মান নির্ধারণ করেছে, তারচেয়ে ওই সব নমুনায় অনেক বেশি মাত্রায় ইউরেনিয়াম পাওয়া গিয়েছে।
গবেষকদের দাবি সবচেয়ে খারাপ অবস্থা রাজস্থানের। এই রাজ্যের সব কূপগুলির এক তৃতীয়াংশেই বেশি মাত্রায় পাওয়া গেছে ইউরেনিয়াম। এছাড়াও উত্তর-পশ্চিম ভারতের রাজ্যগুলির আরও ২৬ টি জেলায় ও দক্ষিণ-পূর্বভারতের আরও ৯টি জেলায় একইরকম বিপজ্জনক মাত্রায় ইউরেনিয়াম মিলেছে ভূগর্ভস্থ জলে। পরিবেশবিদরা বলছেন, বায়ু বা দল দূষণের জন্য যেমন মানুষ দায়ী এক্ষেত্রে বিষয়টা সেরকম নয়। ভূগর্ভস্থ জলের ইউরেনিয়াম দূষণে উত্স একেবারেই প্রাকৃতিক।
এই পরিমাণ বেড়ে যায় জলে ইউরেনিয়ামের দ্রাব্যতা বাড়লে। বেশি মাত্রায় ভূগর্ভস্থ জল তোলা হলে মাটির নিচে জলের গভীরতা কমে যায়। অগভীর জলের অক্সিডেশন অবস্থার সৃষ্টি হয়। এর ফলে এই জলের ইউরেনিয়ামে দ্রাব্যতা বেড়ে যায়। ফলে ওই জলের ইউরেনিয়াম ধারণ ক্ষমতা আরও বাড়ে।
ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দলটির দাবি, ভারতের অনেক জায়গাতেই এই ফ্যাক্টরগুলি একসঙ্গে ঘটায় হঠাতই দ্রুত হারে বাড়তে শুরু করেছে ইউরেনিয়ামের মাত্রা। এই ভূগর্ভস্থ জলই আমাদের পানীয় জল থেকে শুরু করে কৃষি-সেচ সমস্ত ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়। ফলে খাবার জল থেকে শাকসব্জি সবের মধ্য দিয়েই এই ভয়ঙ্কর ক্ষতিকর ধাতুটি প্রবেশ করছে ভারতীয়দের শরীরে।