আইনসভায় বড় সাফল্য পেল ভারতের মোদী সরকার। ধ্বনিভোটে লোকসভায় পাস হয়ে গেল তিন তালাক বিল।
কোনও প্রকার সংশোধনী ছাড়াই পাস হয়ে গেল তিন তালাক বিল। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবি শংকর প্রসাদ বিলটি পেশ করেন৷ পরে বিতর্কসভায় বিলটির স্বপক্ষে তিনি বলেন, যদি মুসলিম রাষ্ট্রগুলিতে এই প্রথা নিষিদ্ধ হতে পারে তাহলে ভারতে কেন নয়?
তিন তালাক নিয়ে উত্তাল জাতীয় রাজনীতি৷ বিলটির পক্ষে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলই সরকারকে শর্তসাপেক্ষে সমর্থন জানিয়েছিলেন৷ আবার বিলটির বিরোধীতায় নেমেছিল কিছু কট্টরপন্থী সংগঠন৷ তাদের দাবি, এই বিলটি মুসলিম মহিলাদের স্বার্থের পরিপন্থী৷ কিন্তু যাদের জন্য এই বিল আনা হয়েছে সেই মুসলিম মহিলারা মুক্ত কন্ঠে বিলটিকে স্বাগত জানিয়েছে৷ তাৎক্ষণিক তিন তালাককে অসাংবিধানিক বলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী৷ বিলটি পেশ করার পর তিনি বলেন, কোন ধর্ম বা জাতির জন্য আইন নয়৷ সবার জন্য আইন৷ মহিলারাও বিচার ও সম্মান পাওয়ার অধিকারী৷
বিলটির স্বপক্ষে সংসদে বক্তব্য রাখেন বিজেপি সাংসদ মিনাক্ষী লেখি৷ আবেগপ্রবণ হয়ে মুসলিম মহিলাদের প্রতি তার আবেদন, নরেন্দ্র মোদীর মতো ভাই থাকতে মুসলিম মহিলারা চিন্তা করবেন না৷ কাউকে ভয় পাওয়ারও দরকার নেই তাদের৷ মহিলারাই এদেশের সংখ্যালঘু৷ তাদের দমিয়ে রাখে এমন প্রথা বাতিল করতে হবে৷
এদিকে সংসদে বিলটি পেশ হওয়ার পরই উল্লসিত হয়ে পড়েন মুসলিম মহিলারা৷ আজকের দিনটি তাদের কাছে ইদের চেয়েও কম খুশির দিন নয়৷ অনেক জায়গাতেই মুসলিম মহিলাদের মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা গিয়েছে৷ আগ্রার এক মুসলিম মহিলা মোদী সরকারের গুণগান গেয়ে বলেন, এর আগে কেউ আমাদের কথা ভাবেনি৷ এই প্রথম কোন সরকার আমাদের কথা ভাবল৷ এবার মুসলিম ছেলেরা বুঝতে পারবে আমাদের কষ্ট৷ বিয়ে করার আগে অন্ততপক্ষে দুবার চিন্তা করবে৷ আগামী প্রজন্ম এই বিলের উপকারিতা বুঝতে পারবে এবং তার থেকে লাভবান হবে৷
উল্লেখ্য, এই বিল পাশ হওয়ার ফলে মুখের কথায় বা লিখিতভাবে, ইলেকট্রনিক যন্ত্র ব্যবহার করে বা যেকোন উপায়ে শুধু কয়েকটি শব্দ ব্যবহার করেই স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করা যাবে না। এই বিলে বলা হয়েছে, তিনবার ‘তালাক‘ শব্দটি উচ্চারণ করে স্ত্রীকে ডিভোর্স দিলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য করা হবে।