করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় বর্তমানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভেন্টিলেটর বা কৃতিম শ্বাস-প্রশ্বাস যন্ত্র। বিশ্ব বিপুল সংখ্যক করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় ভেন্টিলেটর একেবারে অপ্রতুল। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে এবার করোনার বিরুদ্ধে ময়দানে নামল নাসা। মার্কিন মুলুকে কোভিড-১৯ আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য হাইপ্রেশার ভেন্টিলেটর তৈরি করে ফেলল আমেরিকার এই মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
করোনা ভাইরাসের উৎসস্থল চীন হলেও এই মারণ জীবাণু সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে আমেরিকার। সে দেশে মৃতের সংখ্যা ছড়িয়েছে ৫০ হাজার। আক্রান্ত প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ। মৃতের সংখ্যা হু হু করে বেড়ে যাওয়ার নেপথ্যে ভেন্টিলেটরের অভাবকেই দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এই অত্যন্ত জরুরি মেশিনটি পর্যাপ্ত সংখ্যায় থাকলে অনেক করোনা আক্রান্তকেই বাঁচানো যেত বলেই মনে করছেন তারা। এহেন পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রশাসনের পাশে দাঁড়িয়েছে নাসা।
ইতিমধ্যেই নাসার তৈরি ভেন্টিলেটর কোভিড আক্রান্তদের চিকিৎসায় ব্যবহারও শুরু করে দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। তাতে সাফল্যও মিলছে। নাসার প্রযুক্তিতে তৈরি ভেন্টিলেটর সমাদৃত হচ্ছে আমেরিকার চিকিৎসক মহলেও। নিউ ইউর্ক, নিউ জার্সি, ক্যালিফোর্নিয়া-সহ একাধিক শহরের হাসপাতালগুলিতে চাহিদা মতো ভেন্টিলেটর ছিল না বলে বিস্তর অভিযোগ উঠছিল। স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর এমন নিদারুণ চেহারা প্রকাশ্যে আসতেই ভেন্টিলেটর তৈরির প্রকল্প হাতে নেয় নাসার গবেষকেরা। মাত্র ৩৭ দিনের মধ্যেই আধুনিক ভেন্টিলেটরে তৈরি করে ফেলে সংস্থাটি। চলতি সপ্তাহে নিউ ইয়র্কের স্কুল অব মেডিসিনে নাসার ভেন্টিলেটর পরীক্ষামূলক ব্যবহার করেন চিকিৎসকেরা। আক্রান্তদের প্রাণ সংশয় ঠেকাতে চিকিৎসাক্ষেত্রে ব্যবহৃত প্রথাগত ভেন্টিলেটরের সঙ্গে টেক্কা দিচ্ছে নাসার ভেন্টিলেটরগুলি।
নাসার ‘জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরি’র ডিরেক্টর মাইকেল ওয়াটকিন্স বলেন, ‘আমরা মহাকাশ যান নির্মাণে দক্ষ। আমরা চিকিৎসা সরঞ্জাম তৈরি করি না। তবে উন্নত ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আমাদের দখল ও লাগাতার পরীক্ষা-নিরীক্ষা-সহ যে কোনো যন্ত্রের প্রোটটাইপ নির্মাণে আমাদের দক্ষতা এই কাজে আমাদের মদদ করেছে। এহেন বিপর্যয়ে দেশের পাশে দাঁড়িয়ে চিকিৎসা সামগ্রী নির্মাণের গুরুত্ব আমাদের ইঞ্জিনিয়াররা বুঝতে পেরেছেন এবং এটাকে নিজের কর্তব্য বলেই মনে করছেন তারা।’