গাঙ্গেয় অববাহিকার নিম্নাঞ্চলে অবস্থিত দেশের একমাত্র দ্বীপ ভোলা। বর্তমান ভোলা একদা বৃহত্তর বরিশাল জেলার একটি মহকুমা ছিল। ১৮৫৪ সালে দ্বীপটি মহকুমায় উন্নীত হয়। ১৯৮৪ সালে মহকুমা থেকে জেলার মর্যাদা পায়। ভোলার আদি নাম ছিল দক্ষিণ শাহবাজপুর। ভোলা জেলার দক্ষিণের উপজেলা চরফ্যশন ও মনপুরায় কাঁকড়া শিকার করে অনেকেই স্বাবলম্বী হচ্ছেন। এখানে প্রচুর ছোট-বড় খাল থাকায় প্রাকৃতিকভাবে ব্যাপক কাঁকড়া উৎপাদন হয়। খবর বাসসের।
এছাড়া এই অঞ্চলটি সাগর ও নদী প্রধান হওয়াতে খাল ও পুকুরে জাল দিয়ে অনেকেই এখন কাকড়া চাষ করছেন। এখানকার পানি লবনাক্ত হওয়ায় বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায় কাঁকড়া চাষে। তাই কাঁকড়া আহরনে অনেক পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে এখানে। উপজেলার দক্ষিণে চর পাতিলা, চর মন্তাজ, চর কচ্ছপিয়া, চর দাতভাঙা, কালকিনি, মানিকা, নিজাম, ঢালচর, কুররি-মুকররিসহ ম্যানগ্রোভ বন জুড়ে আছে সহস্রাধিক ছোট-বড় খাল। প্রাকৃতিক ভাবেই এসব খালে বেড়ে উঠছে বিপুল সংখ্যক কাঁকড়া। এসব কাঁকড়াকে ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে কাঁকড়ার লাভজনক ব্যবসা। চরফ্যাশন ও মনপুরা উপজেলার প্রায় ১০ হাজার জেলের আয়ের উৎস কাঁকড়ার সাথে জড়িত। দিন দিন এ সংখ্যা আরো বাড়ছে।
কাঁকড়া চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কম খরচ ও সল্প পরিশ্রমে অধিক লাভজনক হওয়ায় অনেকেই কাঁকড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত কাঁকড়া শিকার করে অনেকেই ভালো আছেন বর্তমানে। নদী-খালে কখোনো কখোনো বড় সাইজের কাঁকড়া ধরা পড়ে। যা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে ভালো দাম পাওয়া যায়। এছাড়া চাষের কাঁকড়ার বেশ কদর রয়েছে বাজারগুলোতে। এসব কাঁকড়ার খাদ্যের মধ্যে রয়েছে শুটকি, কুইচ্ছা কুচিলা, চেওয়া মাছ, চিংড়িগুড়া, আলুপা । রোগ-বালাইও সাধারনত হয়না। খাল ও পুকুরে নেট দিয়ে আটকিয়ে কাঁকড়ার হ্যাচারিগুলো তৈরি করা হয়।
মো: রেজাউল করিম জানান, কাঁকড়া চাষিদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ হিসাবে গড়ে তোলা হচ্ছে। গত বছর চরফ্যশনে ১৬টি ও মনপুরায় ১৪টি মিলিয়ে মোট ৩১টি কাঁকড়ার খামারের প্রদর্শণীর ব্যবস্থা করা হয়েছিলো। সরকারের পক্ষ থেকে খাঁচা, নেটসহ বিভিন্ন উপকরন সহয়তাসহ সব ধরনের পেরামর্শমূলক সেবা দেওয়া হয় কাঁকড়া চাষিদের।