ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ‘ভিশন ২০২১’ বাস্তবায়ন এবং একটি অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা গঠনে মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
মন্ত্রী মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় ঢাকার কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন সম্মেলনকক্ষে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট আয়োজিত “মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম ৪র্থ পর্যায়” প্রকল্পের জাতীয় সম্মেলন ২০১৭ এর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
ধর্মমন্ত্রী বলেন, মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম শীর্ষক প্রকল্পটি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি সফল প্রকল্প। হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে বাস্তবায়িত এ প্রকল্পের সফলতার ধারাবাহিকতায় বর্তমানে প্রকল্পটির ৪র্থ-পর্যায় বাসত্মবায়িত হচ্ছে। বর্তমান সরকারের আন্তরিক সহযোগিতায় প্রকল্পের কার্যক্রম সমগ্র বাংলাদেশে সম্প্রসারিত হয়েছে। প্রকল্পটি নিরক্ষরতা দূরীকরণ, বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী শতভাগ শিশুকে বিদ্যালয়ে ভর্তি এবং ঝরে পড়া রোধ করতে সহায়তা করছে। এছাড়া টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নে প্রকল্পটি কার্যকর ভূমিকা রাখছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, প্রকল্পের মাধ্যমে হিন্দু ধর্মাবলম্বী শিশু শিক্ষার্থীদের অক্ষরজ্ঞান ও আধুনিক শিক্ষাদানের পাশাপাশি নৈতিকতা শিক্ষা ও ধর্মীয় চর্চার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বয়স্ক শিক্ষার্থীদেরকে নিরক্ষরতা মুক্ত করে উন্নত জীবন যাপন সম্পর্কে সচেতন করা হচ্ছে।
ধর্মমন্ত্রী বলেন, মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের শিক্ষাক্রম আধুনিক, বিজ্ঞানসম্মত ও যুগোপযোগী করা হয়েছে। সরকারের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার পরিচালন কাঠামো-২০০৮, জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০, জাতীয় শিশুনীতি-২০১১ এবং শিশুর প্রারম্ভিক যত্ন ও বিকাশের সমন্বিত নীতি-২০১৩ এর আলোকে এই প্রকল্পের শিক্ষাক্রম প্রণিত হয়েছে। ফলে শিশুরা আনন্দঘন পরিবেশে স্নেহ, মায়া মমতার মাঝে খেলাধুলা, ছড়া, গল্প, নাচ, গান, ক্রীড়া, শরীরচর্চা, চিত্রাঙ্কন ইত্যাদির মাধ্যমে শিখতে পারছে। শিশুদের স্কুলের প্রতি আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে এবং তাদেরকে পরবর্তী আনুষ্ঠানিক শিক্ষার জন্য উপযুক্ত করে গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে।
হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস-চেয়্যারম্যান বিচারপতি গৌর গোপাল সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাধন চন্দ্র মজুমদার, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল জলিল, প্রকল্প পরিচালক স্বপন কুমার বড়াল প্রমুখ। সম্মেলনে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টিবৃন্দ, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব রণজিৎ কুমার দাস, হিন্দু ধর্মীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিতি ছিলেন। এছাড়াও সম্মেলনে এ প্রকল্পে কর্মরত সারাদেশ থেকে ফিল্ড সুপারভাইজার, সহকারী পরিচালক, শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ অংশগ্রহণ করেন।