ডিএমপি নিউজঃ জন্মিলে মরিতে হবে এই চিরন্তন সত্যকে আস্বাদন করে সকলের মাঝে বেঁচে থাকাটাই স্বার্থক জীবনের পরিপূর্ণতা। আর সেই মৃত্যু যদি হয় অকুতোভয় দেশপ্রেমিকের, সেই মৃত্যু যদি হয় দেশমাতৃকার কল্যাণে তাহলে ধণ্য সেই মৃত্যু। আর এমনি এক মৃত্যুর সাধ আস্বাদন করলেন বাংলাদেশ পুলিশ এর এএসআই মোঃ আক্তার হোসেন।
এএসআই মোঃ আক্তার হোসেন ২০১৯ সালে হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা রিজিয়নে কর্মরত থাকাকালীন সেপ্টেম্বর মাসের এক তারিখ মিয়াবাজার হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চৌদ্দগ্রাম পৌরসভা হতে লালবাগ পর্যন্ত রাত্রকালীন ডিউটির সময়ে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম ঘোলপাসা ইফপির বাবুর্চি বাজারে নিকট একটি কাভার্ড ভ্যান দুর্ঘটনার সংবাদ পান। তাৎক্ষনিক তিনি সেখানে যান এবং রাস্তায় যানজটের কারণে তিনি রাস্তা যানজটমুক্ত করতে থাকেন এবং দুর্ঘটনা কবলিত কাভার্ড ভ্যানটি সরানোর চেষ্টা করেন। ঠিক তখনিই আরেকটি কাভার্ডভ্যান দ্রুত গতিতে এসে তাঁকে চাপা দিয়ে চলে যায়।
এই দুর্ঘটনার খবর পেয়ে মিয়াবাজার হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার ও ফোর্সসহ এসে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় জনসাধারণের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক আক্তার হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।
তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে বাংলাদেশ পুলিশ হারায় একজন দক্ষ, নিষ্ঠাবান ও কর্তব্যপরায়ন পুলিশ অফিসারকে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাধারণ মানুষের চলাচল সহজ ও নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে মহাসড়কে যানজট নিরসনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাঁর আত্মত্যাগে বাংলাদেশ পুলিশ আক্তার হোসেনকে ২০১৯ সালে “বাংলাদেশ পুলিশ পদক(বিপিএম)-মরণোত্তর” পদকে ভূষিত করেছে।
আত্মত্যাগী এ পুলিশ কর্মকর্তা কুমিল্লা জেলার বুরুড়া থানার মঃ ছোট বাতুয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মোঃ দুলাল মিয়া ও মাতার নাম মোছাঃ শাহানারা বেগম। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন বিবাহিত। তিনি স্ত্রী, কন্যা ও ছোট্ট একটি পুত্র সন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তিনি ২০০৭ সালে কনস্টবল হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন।
তাঁর অকাল মৃত্যুতে বাংলাদেশ পুলিশ শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা ও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছে।
তথ্যসূত্রঃ পুুলিশ পদক ২০১৯ ও পিআইএমএস