হাতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। দোহার স্টেডিয়াম ৯৭৪–এ মুখোমুখি হবে ব্রাজিল (Brazil) ও সুইজারল্যান্ড (Switzerland)। সার্বিয়ার (Serbia) বিরুদ্ধে ০-২ ব্যবধানে জেতার পর, এবার জিতলে অনায়াসে কোয়ার্টার ফাইনালে চলে যাবে তিতে-র (Tite) দল। স্বভাবতই এই ম্যাচে মাঠে থাকবেন না নেইমার (Neymar Jr)। এমনকি লিগ পর্বের শেষ ম্যাচ ক্যামেরুনের (Cameroon) বিরুদ্ধেও তিনি নেই। কিন্তু প্রশ্ন হল ব্রাজিলের ‘পোস্টার বয়’-কে কি নক আউট পর্বে পাওয়া যাবে? নম্বর ১০ জার্সিধারী নেইমার যাতে খেলতে পারেন সেইজন্য ব্রাজিল টিম ম্যানেজমেন্ট এক অভিনব পদ্ধতি নিয়েছে। জানা গিয়েছে নেইমারকে দ্রুত ফিট করে তোলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (NASA) প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছে তিতে-র মেডিক্যাল স্টাফরা।
নেইমারের ফিজিওথেরাপির কাজে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। ইনস্টাগ্রামে ‘কমপ্রেশন বুট’ (Compression Boot) নামের এই প্রযুক্তির ছবি নেইমার নিজেই প্রকাশ করেছেন। দ্রুত ব্যথা কমাতে দুই পায়েই এই পোশাক পরতে হয়। দেখতে অনেকটা প্যান্টের মতো। এর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া প্রযুক্তি শরীরের ব্যথা কমানোর কাজ করে, যা নাসাতে ব্যবহার করা হয়। তবে শুধু ব্যথা নয়, আঘাত পাওয়া জায়গায় রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখা, ফোলা কমানো, ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু পুনর্গঠন ও ক্র্যাম্প কমানোর কাজও করে এই প্রযুক্তি।
তবে নেইমার এই ‘কমপ্রেশন বুট’ আগেও ব্যবহার করেছেন। বার্সেলোনায় (Barcelona FC) খেলার সময় এমন গোড়ালির চোটে জর্জরিত ছিলেন নেইমার। তখন তিনি এই একই পদ্ধতির সাহায্য নিয়ে মাঠে ফিরে এসেছিলেন। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘এএস’ জানিয়েছে, নেইমার নাসার এই প্রযুক্তি আগেও ব্যবহার করেছিলেন। ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশনের (CBF) ফিজিওথেরাপি দলের কাছেও এই প্রযুক্তি আছে। এটি একই সঙ্গে দুই পায়ে ব্যবহার করতে হয়। ‘কমপ্রেশন বুট’ পরে তিনভাবে পায়ে ম্যাসাজ করা যায়। নেইমার আপাতত এই ম্যাসাজ নিয়েই সুস্থ হয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন। এদিকে ব্রাজিল কোচ তিতেও বলেছেন, চলতি বিশ্বকাপে অবশ্যই নেইমারকে ফের খেলতে দেখা যাবে।
ফ্যাব্রিজিও রোমানো (Fabrizio Romano) নামক ইতালির এক ক্রীড়া সাংবাদিক নেইমারের কয়েকটি ছবির কোলাজ টুইটারে পোস্ট করে দিয়েছেন। সেই ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে নেইমারের ডান পায়ের গোড়ালি আগের মতোই মারাত্মকভাবে ফুলে রয়েছে। যন্ত্রণা কমেনি। ফলে ঠিক মতো পা ফেলতে পারছেন না। ‘কমপ্রেশন বুট’ বেধে রেখেছেন পায়ে। তাঁর মুখ প্রত্যয়ী। তাঁকে দ্রুত সুস্থ করে তোলার জন্যই এমন অত্যাধুনিক পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।
২০১৪ সালের বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে খেলার সময় চোট পেয়েছিলেন নেইমার। ভার্টিব্রাতে গুরুতর চোট লাগার জন্য তাঁকে স্ট্রেচারে শুয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল। এরপর নিজের দেশে সেমি ফাইনালে জার্মানির বিরুদ্ধে ১-৭ গোলে হারের লজ্জা হজম করেছিল ব্রাজিল। সেই হারের যন্ত্রণা এখনও ভোলেননি কোনও সেলেকাও সমর্থক। এবার কি নেইমারের তেমনই পরিণতি হবে? সেটাই এখন দেখার।- জি নিউজ