ডিএমপি নিউজঃ মানব পাচার করে মুক্তিপণ আদায়কারী সংঘবদ্ধ চক্রের সন্ধান ও এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই ঢাকা মেট্রো। গ্রেফতারকৃতের নাম- এম.এ.হান্নান ওরফে মল্লিক আব্দুল হান্নান (৩৪) ।
ভিকটিম মোঃ মুন্না ফকিরাপুল এলাকায় একটি প্রেসে চাকরি করতো। গত ০৪ মার্চ’১৭ মুন্না মানব পাচারকারী চক্রের সহিদুল ইসলাম @ সুমন এর মাধ্যমে লিবিয়া যায়। লিবিয়া যাওয়ার পর শুরু হয় তার ওপর নির্যাতন। গত ১৩ মার্চ’১৭ মুন্না তার ভাই মোঃ জিন্নাহ শেখের মোবাইলে ভিডিও কল করে বলে যারা আমাকে লিবিয়া এনেছে তারা এখন চার লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চাচ্ছে। তাদের চাহিদা মত টাকা না দিলে আমাকে তারা মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিচ্ছে। তখন ভিকটিমের ভাই মোঃ জিন্নাহ শেখ ভিডিওতে পাচারকারী চক্রের কয়েকজন সদস্যকে দেখতে পান তারা টাকার জন্য মুন্নাকে মারধর করছে ও তার কান্নার চিৎকার শুনতে পান। পরবর্তীতে পাচারকারী চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন মোবাইল নাম্বার থেকে তার পরিবারের লোকজনকে ফোন করে মুক্তিপণ চার লক্ষ টাকা দাবী করতে থাকে।
উক্ত ঘটনায় গত ২৮ মার্চ’১৭ মোঃ জিন্নাহ শেখ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে একটি মামলা রুজু করে।
মামলাটির তদন্তভার গ্রহন করে পিবিআই। তদন্তের এক পর্যায়ে গত সোমবার (১০ এপ্রিল’১৭) রাত ০৯.৩০ টায় পিবিআই ঢাকা মেট্রোর একটি বিশেষ টিম আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুরানা পল্টন সাব্বির টাওয়ারের সামনে অভিযান চালিয়ে এম.এ.হান্নান ওরফে মল্লিক আব্দুল হান্নানকে গ্রেফতার করে।
আটককৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে পিবিআই জানতে পারে, সে ও মানব পাচারকারী চক্রের পলাতক অন্যান্য সদস্যরা লিবিয়া, কাতার ও মালয়েশিয়াসহ আরো কয়েকটি দেশে মানব পাচার করে মুক্তিপণ আদায় করে আসছে। সিন্ডিকেটের এম.এ.হান্নান ওরফে মল্লিক আব্দুল হান্নান, শহিদ ও রয়েল লোক সংগ্রহ করে দেশের আঞ্চলিক লিডার সহিদুল ইসলাম সুমন এর কাছে বুঝিয়ে দেয়। সুমন যাদের পাসপোর্ট করা নেই তাদের পাসপোর্ট করে নজরুল ইসলাম সুমন এর কাছে তুলে দেয়। নজরুল ভিসা, টিকিট, বর্ডিং পাস, ইমিগ্রেশন ইত্যাদি দেখে অর্থাৎ এয়ারপোর্ট পার করানোর দায়িত্ব তার। বিদেশে থাকা উক্ত সিন্ডিকেটের মুল হোতা কাজী ইসমাইল তার নিজস্ব এজন্টের মাধ্যমে দুবাই হতে তাদের গ্রহণ করে তার নিয়ন্ত্রনে নেয়। পরে বাংলাদেশে সুমনের মাধ্যমে মুক্তিপণের টাকা পাওয়ার পর ভিকটিমকে মুক্তি দেয়।