রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য বক্তব্য ও মিথ্যে তথ্য ছড়িয়ে দেয়ায় মায়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকশ পেজ, গ্রুপ ও অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক। গত বছর ওইসব পেজ, গ্রুপ ও অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে রাখাইনে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ওপর নৃশংস অত্যাচার চালায় মায়ানমারের সেনাবাহিনী। এতে বাধ্য হয়ে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মায়ানমার ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।
ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মায়ানমারে ৪২৫টি পেজ, ১৭টি গ্রুপ, ১৩৫টি অ্যাকাউন্ট এবং ১৫টি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মগুলো ছিল বিভিন্ন খবর, বিনোদন, রূপচর্চা ও লাইফস্টাইলভিত্তিক। তবে বাস্তবে এসব পেজের সঙ্গে সেনাবাহিনীর যোগসাজশ রয়েছে অথবা ইতোপূর্বে বন্ধ করে দেওয়া কোনও পেজের নতুন সংস্করণ।
ফেসবুকে মায়ানমারের এমন কর্মকাণ্ডকে পরিকল্পিত বলে ব্যাখা করেছে ফেসবুক। এই নিয়ে তৃতীয়বার মায়ানমারের পেজ ও অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিল ফেসবুক। এর আগে গত আগস্ট ও অক্টোবরেও রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে অনেক অ্যাকাউন্ট ও পেজ ডিলিট করে দেওয়া হয়। এর মধ্যে মায়ানমার সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাং ছাড়াও আরও ২০ জন বার্মিজ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করা হয়। এই বছর মায়ানমারের যেসব মানুষকে ফেসবুক ব্যবহারে ব্লাকলিস্টে রাখা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে উগ্র কট্টরপন্থি জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ভিক্ষু।
এএফপিতে প্রকাশিত খবরে হলা হয়েছে, ফেসবুক মায়ানমারে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী সাইট। বছরের পর বছর ধরে এতে বিদ্বেষপরায়ণ পোস্ট, বিশেষ করে দেশের রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে পোস্ট দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হয়েছে। কিন্তু সে বিষয়ে কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ওই উত্তেজনা গত বছর নতুন এক চরম আকার ধারণ করে। ওই সময় মায়ানমারের সেনাবাহিনী নৃশংস অত্যাচার চালায় রোহিঙ্গাদের ওপর। এসব মানুষের সঙ্গে চরম অমানবিক আচরণের কারণে তারা পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসতে বাধ্য হন।