মোবাইল ছাড়া আমরা যোগাযোগহীন হয়ে পড়ব—এমন কথা এখন আর বাহুল্য নয়। নানা পরিসংখ্যানেও তার সাক্ষ্য মেলে। বিশ্বে প্রতিদিন সহস্রাধিক মোবাইল ব্যবহারকারী যুক্ত হচ্ছে। বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির বিক্রি করা সিমের সংখ্যা ১২ কোটি ছাড়িয়ে গেছে।
আজকাল মোবাইলের রেডিয়েশন বা তেজষ্ক্রিয়তার কথা খুবই শোনা যায়। মোবাইল থেকে নির্গত রেডিয়েশন মানুষের দেহের ক্ষতি করতে পারে, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে বেশি ক্ষতিকর। উন্নত দেশগুলোতে নিয়ম রয়েছে শিশুদের মোবাইল ফোনের বিজ্ঞাপনে লক্ষ্য হিসেবে দেখানো যাবে না। আমাদের দেশে শিশুদের মোবাইল কোম্পানির বিজ্ঞাপনে হরহামেশা ব্যবহার করা হচ্ছে।
যেভাবে রেডিয়েশন থেকে বাঁচবেন
দৃশ্যমান কোনো কিছু আপনার ক্ষতি করলে সহজেই বুঝতে পারেন এবং তার প্রতিকার করে থাকেন। কিন্তু যে ক্ষতি দেখা যায় না, প্রাথমিকভাবে বোঝা যায় না— তাকে বলে নীরব ঘাতক বা সাইলেন্ট কিলার। মোবাইলের রেডিয়েশনও তেমনই। মোবাইলে ১৫-২০ মিনিট কথা বলার পর দেখবেন মাথা ঝিম ঝিম করছে, অস্থিরতা বেড়ে গেছে। একটানা ১ ঘণ্টা বা তার অধিক কথা বললে দেখবেন মাথাব্যথা করছে। বড়দের তুলনায় শিশুদের বেশি ক্ষতি হয়। তাই শিশুদের মোবাইল থেকে দূরে রাখুন। যা ব্রেন ক্যান্সারে গিয়ে ঠাঁই নিতে পারে। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে বলে ক্ষতির পরিমাণও বেশি। রেডিয়েশনের হাত থেকে রক্ষা পেতে করণীয়—
– মোবাইল বুক পকেটে রাখবেন না।
– কথা বলার সময় এক কানে ধরে কথা বলবেন না। দুই কান ব্যবহার করুন।
– ব্যাটারির চার্জ কমে গেলে কথা না বলাই ভাল। তখন রেডিয়েশনের পরিমাণ বেড়ে যায়।
– প্রয়োজনে হেডফোন ব্যবহার করুন।
– মোবাইল পাশে নিয়ে ঘুমাবেন না।
– ভাল ব্র্যান্ডের মোবাইল ব্যবহার করুন। যেন-তেন ব্র্যান্ডের মোবাইলে রেডিয়েশন বেশি হয়।
– একটানা ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলা থেকে বিরত থাকুন।
– প্যান্টের পকেটে মোবাইল রাখাও নিরাপদ নয়। কোমরে বা হাতে রাখুন।
এ সব কিছু বিবেচনা করে অভিভাবক ও শিক্ষকদের উচিত সন্তান ও শিক্ষার্থীদের মোবাইল ব্যবহারে সচেতন করা। সেই সঙ্গে মোবাইলে কথা বলার আদব-কায়দাও জেনে নেওয়া উচিত।
আরও কিছু টিপস
– মোবাইলের স্পিকার অন করে কথা বলার চেষ্টা করুন। এতে মাথা মোবাইল থেকে দূরে থাকে। যদিও এর কিছু ক্ষতিকারক দিক আছে।
– সম্ভব হলে ইয়ারবাডস ব্যবহার করুন। এতে মাথাকে মোবাইল থেকে দূরে রাখা রাখা যায়।
– গাড়ি, ট্রেন ও বিমানে মোবাইলের ব্যবহার যত সম্ভব কম করুন। মোবাইল ফোন লোহা নির্মিত জায়গায় বেশি শক্তি ক্ষয় করে। আর অনেক বেশি রেডিয়েশন ছড়ায়।
– বাড়িতে মোবাইলের পরিবর্তে ল্যান্ডলাইন ব্যবহারের চেষ্টা করুন। কর্ডলেস ল্যান্ডফোন মোবাইল থেকে কম রেডিয়েশন ছড়ায়।
– মোবাইলের জন্য কাভার কিনুন। এটা ফোনের রেডিয়েশন ছড়ানোকে কিছুটা হলেও রোধ করবে।
– যদি মেসেজের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কথা সারা যায়, তবে মেসেজই ভাল। এতে অন্তত মোবাইলটা আপনার মাথার কাছ থেকে দূরে থাকবে।
–ভাল কোন এন্টি রেডিয়েশন স্টিকার বা কিট ব্যবহার করা