ডিএমপি নিউজঃ পবিত্র মাহে রমজানে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুতি নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। নগরবাসীর নিরাপত্তার পাশাপাশি পবিত্র এই মাসে ভেজাল মুক্ত খাবার নিশ্চিত করতে ও খাবারে যেকোন ভেজাল প্রতিরোধ করতে কাজ করবে মোবাইল কোর্ট বা ভ্রাম্যমান আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তত্ত্বাবধানে সক্রিয় থাকবে এই মোবাইল কোর্ট।
আজ ২৫ এপ্রিল’১৯ বেলা ১১টায় ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে মাহে রমজান ও পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা মহানগর এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিশেষ সমন্বয় সভায় একথা বলেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম(বার), পিপিএম।
আসন্ন মাহে রমজান ও ঈদকে ঘিরে ঢাকা মহানগরীতে ডিএমপি কর্তৃক গৃহীত নিরাপত্তা সম্পর্কে কমিশনার বলেন, অতীতের মত এবারও রমজান ও ঈদে ঢাকা মহানগরী জুড়ে নেয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মহানগরীর বাস টার্মিনাল, লঞ্চ ঘাট ও রেল স্টেশনে মোতায়েন থাকবে অতিরিক্ত পুলিশ। ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অজ্ঞান ও মলম পার্টির প্রতিরোধে রমজান ও ঈদে মোতায়েন থাকবে সাদা পোশাকে ও ইউনিফর্মে পুলিশের বিশেষ টিম। বিভিন্ন মার্কেট শপিং মলে পুলিশ নিরাপত্তা দিবে। পাশাপাশি মার্কেটের নিরাপত্তার জন্য মার্কেট মালিক সমিতিকে সিসিটিভি, আর্চওয়ে, নিজস্ব সিকিউরিটি, এক্সেস কন্ট্রোল মেশিনসহ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
নগদ টাকা পরিবহনে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার আহবান জানিয়ে কমিশনার বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং এর এজেন্টের টাকাসহ মোটা অংকের টাকা পরিবহনের ক্ষেত্রে পুলিশের মানি এস্কর্ট সেবা নিন। পুলিশের মানি এস্কর্ট ছাড়া মোটা অংকের টাকা এক জায়গা থেকে অন্যত্র নিবেন না। মানি এস্কর্টের প্রয়োজন হলে নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করুন। প্রতিটি মার্কেটে জাল টাকা সনাক্তকারী মেশিন রেখে সন্দেহজনক টাকা পরীক্ষা করতে ব্যবসায়ীদের পরামর্শ দেন কমিশনার।
রমজানে যানজট সহনীয় রাখার বিষয়ে কমিশনার বলেন, পবিত্র রমজানে জনসাধারণ যাতে নিরাপদে ইফতারের আগে নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে সে লক্ষ্যে ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ কাজ করবে। সেক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে সকলকে সহযোগিতা করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুষ্ঠুভাবে ইন্টারসেকশন ম্যানেজমেন্ট বাস্তবায়ন করা অর্থাৎ ইন্টারসেকশনে কোন গাড়ি জটলা করে থাকবে না, নির্ধারিত স্থানে গাড়ি পার্কিং, শপিং মলের সামনে বা আশপাশে যানবাহন পার্কিং বন্ধ রাখা, ফুটপাত হকারমুক্ত রাখা, ফুটপাতে গাড়ি পার্কিং না করা এবং মোটরসাইকেল চলতে না পারে সে ব্যবস্থা করা, রিক্সা-ভ্যান-ঠেলাগাড়ি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় উঠতে না দেয়া। এ সমস্ত বিষয়াদি নিবিড় তদারকির জন্য পিক আওয়ারে উর্ধ্বতন পুলিশ অফিসার রাস্তায় থেকে যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করবে।
ঈদের আগে প্রতিটি গার্মেন্টস-ফ্যাক্টরীর শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করতে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ’র প্রতি আহবান জানান কমিশনার।
ঈদে সড়ক দূর্ঘটনা প্রতিরোধে বাস মালিক সমিতিকে সক্রিয় থাকার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ড্রাইভারের লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা করে গাড়ি টার্মিনাল থেকে বাহির করতে হবে। লক্কর-ঝক্কর গাড়ি রাস্তায় নামানো যাবে না। বাস মালিক সমিতি ও পুলিশের সমন্বয়ে টিকিট কালোবাজারীদের প্রতিরোধ করতে হবে। টার্মিনালের প্রবেশ ও বাহির পথ যানজটমুক্ত রাখতে হবে। টার্মিনাল কেন্দ্রিক পর্যাপ্ত সংখ্যক কমিউনিটি পুলিশ মোতায়েন করতে হবে। নির্ধারিত স্থানে গাড়ি পার্কি করতে হবে। যত্রতত্র বাস থামিয়ে যাত্রী উঠানো যাবে না।
রাস্তায় গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন, ওয়াসাসহ অন্যান্য সেবাদানকারী সংস্থাকে নতুন করে কোন রাস্তা না খুঁড়তে ও পুরাতন খুঁড়া রাস্তা দ্রুত মেরামত করার অনুরোধ জানান ডিএমপি কমিশনার।
উক্ত সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি’র ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ গোয়েন্দা সংস্থা, ফায়ার সার্ভিস, সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সেবাদানকারী সংস্থা, দোকান মালিক সমিতি, বাস-মালিক সমিতি, লঞ্চ মালিক সমিতি, বিজিএমইএ বিকেএমইএ, ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ।