১৩ কোটি জাপানবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে ১৩ বছরের এক কিশোরকে নিয়ে। সূর্যোদয়ের দেশ স্বপ্ন দেখছে তাকে ঘিরে। রাজমুকুট অধিকারের তালিকায় তার নাম দু’নম্বরে আছে জানা সত্ত্বেও, সেই মাহেন্দ্রক্ষণের দিকে চাতক চোখে চেয়ে রয়েছে জাপানবাসী। কারণ, শেষ পর্যন্ত দেশ এবং দশের ভবিষ্যৎ তো ন্যস্ত হবে তারই নবীন কাঁধে। জাপ রাজপরিবারের পতাকা বইতে তো হবে এই তরুণ তুর্কিকেই। কারণ, এই কিশোরের পর গোটা রাজবংশে আর কোনও পুরুষ উত্তরাধিকারী নেই।
তার নাম হিশাহিতো। জাপ রাজপরিবারের কনিষ্ঠতম রাজপুত্র। বর্তমানে রাজপরিবারের মাথা নারুহিতো। পিতা আকিহিতোর মৃত্যু পর চলতি বছরের ১ মে, সম্রাট হন তিনি। কিন্তু, এখনও সিংহাসনে বসেননি। বসবেন আগামী ২২ অক্টোবর। কিন্তু, তাঁর পর সিংহাসনের হকদারদের তালিকায় রয়েছে মাত্র দু’টি নাম। এক ‘প্রিন্স’ আকিশিনো (৫৩) এবং দুই তাঁর পুত্র হিশাহিতো। আকিশিনো সম্পর্কে বর্তমান সম্রাট নারুহিতোর ছোট ভাই।
ঘটনা হল, ১৯৬৫ সালের পর থেকে দীর্ঘ একটা সময় ধরে জাপ রাজপরিবারে কোনও পুত্রসন্তানের জন্ম হয়নি। সেই ধারা ভাঙে ২০০৬ সালে। ওই বছরই জন্ম নেয় হিশাহিতো। বর্তমানে সে পড়াশোনা করছে একটি জুনিয়র হাই স্কুলে। আর এই কিশোরকে ঘিরেই চড়ছে জাপানবাসীর আগ্রহের পারদ।
ইতিমধ্যেই এ নিয়ে সেদেশের প্রথম সারির সংবাদপত্র, ‘আসাহি’-র বিশ্লেষণ প্রকাশ্যে এসেছে। আর তাতে বলা হয়েছে, এ কথা স্পষ্ট যে খুব স্বাভাবিকভাবেই অদূর ভবিষ্যতে রাজভার বহন করতে হবে হিশাহিতোকে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বয়সের বিচারে হিশাহিতোর অভিজ্ঞতা বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তাকে কতটা সাহায্য করবে রাজপরিবারের ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বা রাজপরম্পরা অক্ষুণ্ণ রাখতে? শুধু তাই নয়। পত্রিকাটি সন্দেহ প্রকাশ করেছে জাপ রাজপুত্রের ‘মেন্টর’-এর অভাব নিয়েও।
কারণ তাদের ব্যাখ্যা, নারুহিতোর যেমন দু’জন পথপ্রদর্শক ছিলেন, বাবা আকিহিতো এবং কেইও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সভাপতি শিনজো কোইজুমি। সে রকম কাউকে এখনও পায়নি হিশাহিতো। সেক্ষেত্রে কীভাবে রাজদায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হবে হিশাহিতো? তবে এ কথা স্পষ্ট যে, আকিশিনোকে নয়, তাঁর পুত্র, হিশাহিতোকে সামনে রেখেই স্বপ্ন দেখছে জাপানবাসী। আর এখন থেকেই দিন গুনছে তার রাজ্যাভিষেকের।