১. টমাস অ্যান্ড্রু
তিনি ছিলেন আর.এম.এস. টাইটানিকের প্রধান নৌ স্থপতিদের একজন। টাইটানিকের প্রথম যাত্রাতেও তিনি জাহাজটিতে স্থান পেয়েছিলেন। অ্যান্ড্রু টাইটানিকের ভঙ্গুরতা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। তাই তিনি জাহাজটির খোলস দুই স্তরে করার পরামর্শ দিয়েছিলেন এবং এতে ২০টির বদলে ৪৬টি লাইফ বোট রাখার কথা বলেছিলেন। কিন্তু খরচ কমানোর অজুহাতে তার কথায় কান দেওয়া হয়নি। ১৯১২ সালের ১৫ এপ্রিল যখন টাইটানিক ভাসমান বরফখণ্ডে আঘাতের পর ডুবে যাচ্ছিল তখন তিনি নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেককেই বাঁচিয়েছেন। তাকে সর্বশেষ প্রথম শ্রেণির একটি কামরায় বসে ধুমপানরত অবস্থায় কাঁদতে দেখা গিয়েছে। তার মৃতদেহ আর কখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
২. উইলিয়াম বুলোক
যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিভাবান ব্যক্তিটি ১৮৬৩ সালে সংবাদ ছাপার ঘূর্ণনশীল মেশিন বা রোটারি মেশিন আবিস্কার করে উনবিংশ শতাব্দীর প্রিন্ট মিডিয়ায় অভূতপূর্ব অবদান রেখেছিলেন । কিন্তু ভাগ্যের লিখন তারই আবিস্কৃত মেশিনের কারণে তাকে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যেতে হয় । ১৮৬৭ সালে ৩ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায় তার রোটারি মেশিনের গিয়ার নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে দুর্ভাগ্যজনকভাবে মেশিনের একটি রোল গড়িয়ে তার পায়ের উপর পরে এবং সাথে সাথে তার পা দুটি চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। একপর্যায়ে সেবা ও চিকিৎসার অভাবে এই হতভাগ্য প্রতিভাবানের পা দুটি পচন ধরে। অবশেষে ডাক্তারগণ বুলোক এর দুটি পা কেটে আলাদা করার দিনক্ষণ ঠিক করেন কিন্তু বুলোক তার আগেই ১৮৬৭ সালের ১২ এপ্রিল পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যান ।
৩. ফ্রান্সিস এডগার স্টেনলি
ফটোগ্রাফিক ড্রাই প্লেটের আবিষ্কারক। যেটি তিনি বিক্রি করে দিয়েছিলেন ইস্টম্যান-কোডাক খ্যাত জর্জ ইস্টম্যানের কাছে। আর সেই টাকা দিয়ে তিনি স্ট্যানলি মটর ক্যারিয়েজ কম্পানি স্থাপন করেন। এই কম্পানি থেকে তিনি অনেকগুলো বাষ্পশক্তিচালিত স্বয়ংক্রিয় যান উদ্ভাবন করেন। এগুলোর নাম ছিল স্ট্যানলি স্টিমারস। ১৯১৮ সালের ১৩ জুলাই ফ্রান্সিস স্ট্যানলি তার একটি স্টিমার পরীক্ষা করছিলেন কিন্তু পথিমধ্যে কিছু গবাদি পশুকে বাঁচাতে গিয়ে একটি কাঠের গাদায় ধাক্কা মেরে দুর্ঘটনার কবলে পতিত হন এবং মারা যান।
৪. জ্যাঁ-ফ্রাঁসোয়া পিলাট্রে রোজিয়ার
তিনি ছিলেন একজন ফরাসি রসায়নবিদ এবং পদার্থবিদ। তাকে বলা হয় উড়োজাহাজের আসল জনক। তিনি প্রথম গরম বেলুন ফ্লাইট তৈরি করেন ১৭৮৩ সালে। এছাড়া তিনিই প্রথম হাইড্রোজেন প্রোপেলেন্ট নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। কিন্তু ওই পরীক্ষা চালাতে গিয়ে তিনি তার চুল ও চোখের ভ্রু হারিয়েছিলেন। যে কারণে তিনি আর ওই ধরনের পরীক্ষা চালাননি। ১৭৮৫ সালের ১৫ জুলাই তিনি বেলুনে চড়ে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে গেলে সেটি ধ্বংস হয়ে তিনি যাত্রীসহ নিহত হন।
৫. লুইস স্লোটিন
মার্কিন এই পরমাণু পদার্থবিদ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন মার্কিন পরমাণু প্রকল্প ম্যানহাটন প্রকল্পে কাজ করেছেন। প্লুটোনিয়াম নিয়ে গবেষণা চালানোর সময় ফিশন রিঅ্যাকশনের ফলে রেডিয়েশনের একটি কঠিন বিস্ফোরণ রিলিজ হয়। কী ঘটেছে তা বুঝতে পেরে স্লোটিন বীরের মতো ওই বস্তুগুলো নিজেরে দেহ দিয়ে পুনরুদ্ধার করেন। কিন্তু অন্যরা পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যায়। ১৯৪৬ সালের ৩০ মে তিনি তেজষ্ক্রিয়ার ফলে মারা যান।
৬. ক্যারেল সৌসেক
চেকোশ্লোভাকিয়ান এই দু:সাহসী উদ্ভাবক এমন একটি পিপা আবিষ্কার করেন যেটির ভেতরে কোনো ঝাঁকুনি লাগত না। এর ভেতরে করে তিনি বেশ কয়েকবার নায়াগ্রা জলপ্রপাতের ওপর থেকে ঝাঁপ দিয়ে ভেসে ভেসে যান।
এরই ধারাবাহিকতায় তিনি একটি নতুন ক্যাপসুল আবিষ্কার করেন যেটি পরীক্ষামূলকভাবে হাউস্টন অ্যাস্ট্রোডোম এর ওপর থেকে নিচে ফেলা হয় ১৯৮৫ সালের ২০ জানুয়ারি। কিন্তু সেটি তার লক্ষ্যচ্যুত হয় এবং সৌসেক এর ফলে মারা যান।
৭. সিলভেস্টার এইচ. রোপার
তিনি বিশ্বের প্রথম মটরসাইকেল আবিষ্কার করেন। সেটি ছিল মূলত একটি রুপান্তরিত বাইসাইকেল। যা বাষ্পচালিত ইঞ্জিনে চলত। ১৮৯৬ সালের ১ জুন রোপ মেশিনটি পরীক্ষা করছিলেন। কিন্তু দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মারা যান।
৮. হোরেস লসন হানলে
হোরেস লসন হানলে ছিলেন একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার। তিনি সর্বপ্রথম কমব্যাট সাবম্যারিন আবিষ্কার করেন, সেটির নাম সিএসএস হানলে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো ১৮৬৩ সালে একবার সাবম্যারিনটির যান্ত্রিক সমস্যা হয়, এটি আর ভেসে উঠতে পারছিল না, তখন তিনি এটি টেস্ট করতে যান এবং সাতজন ক্রু মেম্বারসহ ডুবে মরেন।
৯. অউরেল ভ্লাইকো
রোমানিয়ান এই উদ্ভাবক নিজের তৈরি বিমান ভ্ল্যাইকো ডব্লিউ আর ওয়ান, টু এবং থ্রি নিয়ে আকাশে ওড়ার অনেক রেকর্ড সৃষ্টি করেন। যেমন, সর্বোচ্চ, সবচেয়ে দীর্ঘ এবং সবচেয়ে দ্রুতগতির ফ্লাইট। ১৯১৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তিনি সবচেয়ে উঁচুতে ওঠার রেকর্ড করতে গিয়ে কার্পাথিয়ান পর্বতের চুড়া অতিক্রম করছিলেন। আর সে সময়েই তিনি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে নিহত হন।
১০. ভ্যালেরিয়ান আবাকোভস্কি
অ্যারোকারের উদ্ভাবক ইনি। এটিকে অ্যারোওয়াগনও বলা হত। যা ছিল মূলত বাষ্পশক্তিচালিত প্রপেলার চালিত রেল কার। রেলওয়ে নির্বাহীদেরকে সাইবেরিয়ার বিস্তীর্ণ ভুমি দ্রুতগতিতে পার করার জন্য এটি বানানো হয়েছিল। ১৯২১ সালের ২৪ জুলাই ২৫ বছর বয়সী আবাকোভস্কি টুলা থেকে মস্কোর উদ্দেশে ২২জন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন দুর্ঘটনায় পড়ে সকলে নিহত হন।
১১. মেরি কুরি
রসায়ন শাস্ত্রে অসাধারণ অবদান রাখার জন্য দুই বার নোবেল পুরস্কার জয় করেন এই বিদুষী নারী মেরি কুরি। তেজস্ক্রিয়তার ময়দানে তেজষ্ক্রিয় রশ্মি বিষয়ে প্রথম মৃত্তিকাখনক বা পথপ্রবর্তক ছিলেন পোল্যান্ডের বংশোদ্ভুত এই ফরাসি নাগরিক। তার আবিষ্কৃত সূত্রের বর্তমান আধুনিক বিজ্ঞানেও নানাবিধ ব্যবহার হয়ে থাকে। তিনি হচ্ছেন নারীদের মধ্যে সর্বপ্রথম যিনি দুইবার নোবেল পুরস্কার জয় করেন।
উনবিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগে এসে এই মহিয়সী নারী আবিষ্কারের নেশায় নিজেকে সম্পূর্ণভাবে সোপর্দ করেন গবেষণার কাজে। দিনরাত বুদ্ধিবৃত্তিক অনুসন্ধান করতে গিয়ে ভুলে যান নিজের দেহ ও স্বাস্থ্যের কথা। এইভাবে নিজের শরীরকে অবজ্ঞা করার কারণে কোনো একসময় তার দেহে বাসা বাধে মরণঘাতী রোগ। আর তেজষ্ক্রিয় রশ্মির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় দুই চোখের জ্যোতি হারিয়ে হয়ে যান সম্পূর্ণ অন্ধ। অবশেষে ১৯৩৪ সালে এই ক্ষণজন্মা নারী মৃত্যু বরণ করেন।
১২. জেমস ফুলার
দৌড়ের ব্যায়ামকে তিনি জনপ্রিয় করেছিলেন তার মেগা বেস্ট-সেলার বই কমপ্লিট বুক অফ রানিং দিয়ে। এর মাধ্যমে তিনি ফিটনেস এবং স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের দুনিয়ায় তারকা খ্যাতি পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি নিজে এই ব্যায়ামটি শুরু করেছিলেন প্রচুর স্ট্রেস ও বদঅভ্যাসের এক দীর্ঘ জীবন পার করার পর। ১৯৪৮ সালের ২০ জুলাই সকালে তিনি প্রতিদিনের মতো দৌড়াতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। ডাক্তাররা হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়েছে বলে ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তে তার রক্তের শিরা-উপশিরাগুলিতে ৭০-৯৫% ব্লক ধরা পড়ে।
১৩. ম্যাক্স ভ্যালিয়ের
ইনি ছিলেন একজন অস্ট্রিয়ান রকেট বিজ্ঞানী। যিনি কঠিন এবং তরল জ্বালানির মিসাইল আবিষ্কার করেন। এই সাফল্য দেখে তিনি ভাবেন তিনি হয়তো এই প্রযুক্তির ব্যবহার করে রকেটচালিত গাড়িও বানাতে পারবেন। যেমন কথা তেমন কাজ। তিনি ঘন্টায় ২৫০ মাইল গতির গাড়িও উদ্ভাবন করেন। এরপর তিনি অ্যালকোহলকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করার জন্যও গবেষণা করেন। কিন্তু ওই গবেষণা করতে গিয়েই বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে তিনি মারা যান এবং তার ওয়ার্কশপটিও পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
১৪. আলেক্সান্দার বোগদানভ
ব্লাড ট্রান্সফিউশনের কারণে আজকের পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রাণে বেঁচে যায়। কিন্তু এর আবিষ্কারক মারা গেছেন এই ব্লাড ট্রান্সফিউশনের কারণেই। রাশিয়ান ফিজিশিয়ান ও দার্শনিক বোগদানভ চিরযৌবন পাওয়ার আশায় ব্লাড ট্রান্সফিউশন নিয়ে প্রথম এক্সপেরিমেন্ট করেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন বয়স বাড়ার ব্যাপারটিকে উলটে দিতে। কিন্তু তার এই পরীক্ষা সফল হয় নি। এই পরীক্ষার জন্য তিনি একজন ছাত্রের রক্ত তার শরীরে গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু সেই ছাত্রটির যক্ষা ও ম্যালেরিয়া ছিল।
১৫. অটো লিলিয়েনথাল (১৮৪৮-১৮৯৬)
পৃথিবীর মানুষকে যে ব্যক্তি গ্লাইডিং বা উড়তে শিখিয়েছিলেন তিনি গ্লাইডিং করতে গিয়েই মারা যান। অটো লিলিয়েনথাল ‘দ্য গ্লাইডার কিং’ নামেও পরিচিত। তিনি অনেক ধরনের সফল গ্লাইডার আবিষ্কার করেছিলেন। ১৮৯৬ সালে তার একটি গ্লাইডারে ত্রুটি থাকায় তিনি ৫০ ফুট উপর থেকে পড়ে গিয়ে মারা যান।
১৬. লি সি
২০৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে নিজের আবিষ্কৃত নির্যাতনের পাঁচটি কৌশলে নিজেই নির্যাতিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। নির্যাতনের এই পাঁচটি কৌশল ছিল চেহারায় ট্যাটু আঁকা, নাক কেটে ফেলা, পা কেটে ফেলা, খোঁজাকরন এবং সবশেষে প্রাণহরণ। লি সি ছিলেন চীনের কিন রাজবংশের শাসনামলের একজন মন্ত্রী। কিন্তু সম্রাটের বিরাগভাজন হলে তাকে মরতে হয়।
১৭. আবু নাসের ইসমাইল ইবনে হাম্মাদ
১০০৮ খ্রিস্টাব্দে পারস্যের নিশাপুরে মারা যান তিনি। তিনি একাধারে একজন ধর্মযাজক, পন্ডিত এবং উদ্ভাবক ছিলেন। তিনি আকাশে ওড়া নিয়ে মুগ্ধ ছিলেন। ফলে তিনি পালকে আচ্ছাদিত কাঠের ডানা তৈরি করেন। এবং সেগুলো বাহু ও পিঠে বেধে মসজিদের ছাদ থেকে ঝাপ দেন। তিনি ভেবেছিলেন যে তিনি উড়তে পারবেন, কিন্তু পারেননি। তার এই প্রচেষ্টাকে মানবেতিহাসের প্রথম ওড়ার প্রচেষ্টা হিসেবে স্মরণীয় করে রাখতে মসজিদের দেয়ালে একটি ম্যুরাল চিত্র আঁকা হয়। চিত্রটি সত্যিই বেশ সুন্দর।
১৮. ওয়ান-হু
এই মানুষটি সত্যিই ছিলেন কিনা তা নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে তিনি একজন কিংবদন্তী। ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ বা খ্রিস্টিয় ১৬ শতকের এই চীনা সরকারি কর্মকর্তা একটি চেয়ারের সঙ্গে ৪৭টি রকেট জুড়ে দিয়ে নিজেকে চাঁদে পাঠাতে চেয়েছিলেন। একই সঙ্গে ওই ৪৭টি রকেটে আগুন ধরানোর পর এক বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। কিন্তু ধুঁয়া পরিষ্কার হওয়ার পর ওয়ান-হু এবং তার চেয়ারটিকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। বর্তমানে চাঁদের একটি আগ্নেয়গিরির নামকরণ করা হয়েছে ওয়ান-হু-র নামে।
১৯. ফ্রানজ রেইশেল্ট
অস্ট্রিয়ার দর্জি ফ্রানজ রেইশেল্ট প্যারাসুট কোট আবিস্কারক হিসাবে সবার কাছে পরিচিত ছিলেন। তিনি তার আবিষ্কৃত কোটাখানা পরে কোনো উচ্চস্থান থেকে লাফিয়ে ধীরে ধীরে মাটিতে নামতে পারতেন। অবশ্য এর আগেও তার এ ধরনের কয়েকটি প্রয়াস ব্যর্থ হয়েছিল। কিন্তু ১৯১২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তার জীবনের অন্তিম মুহূর্ত এসে হাজির হয় যখন তিনি প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের সামনে বিশাল দর্শক সমাগম করে তার আবিষ্কারটি প্রদর্শনের উদ্যোগ নেন। ফ্রানজ রেইশেল্ট তার প্যারাসুট পরে প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের প্রথম ডেক থেকে নিচে ঝাঁপিয়ে পড়েন কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তার প্যারাসুটটি উন্মুক্ত না হওয়ার কারণে মাটিতে পড়ে তিনি সাথে সাথেই মৃত্যুবরণ করেন।
২০. মাইকেল রবার্ট ডাকরে
ফ্লাইং ট্যাক্সি (AVCN jetpod) এর আবিষ্কারক মাইকেল রবার্ট ডাকরে। তার এই যানটি দুর্ঘটনাবশত ক্র্যাশ করলে তিনি মারা যান। এই যানটি কোনো শহরের মধ্যে অল্প দূরত্বে উড়ে গিয়ে ল্যান্ড করতে পারত। ২০০৯ সালে টেস্ট ড্রাইভে গেলে দুর্ঘটনা ঘটে এবং ডাকরে মারা যান।
২১. থমাস মিডগ্লে জুনিয়র
এই প্রতিভাবান ব্যক্তিটি হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রর একজন প্রকৌশলী। প্রথম জীবনে প্রকৌশলী হলেও শেষ জীবনে তিনি রসায়ন শাস্ত্রে গবেষণা করে পেট্রোল ও সীসা বিষয়ক প্রভূত উন্নতি ও সম্প্রসারিত করেন। রসায়নবিদ্যায় গবেষণাকালে একসময় তিনি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অক্ষম হয়ে পড়েন। কিন্তু তার এই শারীরিক দুর্বলতা তার ভেতরের আবিস্কারের ইচ্ছাকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি।
নিজের জন্য এবং তার মত লোকদের জন্য তিনি দড়ি ও পুলি ব্যবহার করে একটি সিস্টেম দাঁড়া করান, যার মাধ্যমে তার মত পঙ্গু লোকেরা সহজেই বিছানা থেকে উঠতে পারবে। কিন্তু আবিষ্কারের কয়েক বছর পরে দুর্ঘটনাবশত এই যন্ত্রের দড়িতে প্যাঁচ লেগে তিনি শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান।
২২. জিমি হেসেল্ডেন
সেগওয়ে নামক আধুনিক দুই চাকাওয়ালা গাড়ী কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ব্রিটিশ ধনকুবের জিমি হেসেল্ডেন। জিমি হেসেল্ডেন ২০১৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তার কোম্পানির সর্বশেষ মডেলের দুই চাকা বিশিষ্ট গাড়ি চালানোর সময় তার বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি নদীতে পড়ে মৃত্যুবরণ করেন। এই ধনকুবের জিমি হেসেল্ডেন এর সম্পদের পরিমাণ ছিল ১৬৬ মিলিয়ন পাউন্ড।
২৩. ডোনাল্ড ক্যাম্পবেল
ব্রিটিশ রেসার। তিনি ছিলেন ৫০ দশকে জলে ও স্থলে গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতায় একের পর এক নতুন রেকর্ড সৃষ্টিকারী । তিনি প্রতিযোগিতায় যে জলযান ব্যবহার করতেন সেটার নামছিল ব্লু বার্ড -কে ৭ এবং এই গাড়িটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ৩ শত মাইল। কিন্তু তার নেশা ছিল কিভাবে গতি আরো বৃদ্ধি করা যায় এবং দ্রুত জয় ছিনিয়ে আনা যায়। ১৯৬৭ সালের ৪ জানুয়ারী একটি প্রতিযোগিতায় ডোনাল্ড ক্যাম্পবেল কৌশল প্রয়োগ করে তার গাড়ির গতি ঘন্টায় ৩ শত মাইল থেকে ৩৩০ মাইল বাড়িয়ে দেন ফলে জলযানটি ভারসাম্য রক্ষা করতে না পেরে উল্টে যায় এবং একই সাথে নিভে যায় ডোনাল্ড ক্যাম্পবেল এর জীবনের প্রদীপ।