বয়স ৪০ পেরোনোর পরই সতর্ক হোন। এই বয়সে লাইফস্টাইলে বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। জীবনে সফলতা আসে, অভিজ্ঞতার পাল্লাও ভারি হতে থাকে, সেই সঙ্গে কিছু অসুখও হানা দিতে চেষ্টা করে। যদিও বয়স কেবলই একটি সংখ্যা। তারপরও কিছু অভ্যাস নিজের মধ্যে তৈরি করে নেওয়া এখনই জরুরী।
সব কিছু সামলে নিতে শুধু খাবারের অভ্যাসটা ঠিক রাখুন। স্ট্রেস দূর হবে, অসুস্থও হবেন না, থাকবেন ফিট এবং সুস্থ। সঙ্গে বোনাস হিসেবে বাড়বে আপনার আয়ু! কীভাবে? সুস্থ থেকে আরও বেশি আয়ু যোগ করে জীবনকে উপভোগের কয়েকটি সহজ উপায় জেনে নিন:
হজম-শক্তি বাড়িয়ে স্বাস্থ্যকর খাবারঃ
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হজম শক্তি কমতে থাকে। অবশ্যই এমন খাবার খেতে হবে যা দেহকে শক্তিশালী রাখবে রোগ প্রতিরোধ করে। দেহের ফ্যাট কমে এবং হজম শক্তি বাড়িয়ে দিয়ে সব সময় এমন খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। ঘরের খাবার বেশি খান। বাইরের বেশি তেল মশলায় রান্না খাবার, ফাস্টফুড এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।
লাল চাল-লাল আটাঃ
লাল চাল ও লাল আটার তৈরি খাবার খান। এগুলোতে ভিটামিন বি, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার থাকায় হজমে সহায়তা করে। হার্টের সমস্যা, স্থুলতা এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
খেতে হবে সময় মেনেঃ
সময়মতো খাওয়া পুরো লাইফস্টাইলেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। খাবার খেতে দেরি হলে হজমে সমস্যা হয়। ঘুমও ভালো হয় না, বিভিন্ন ধরনের রোগও দ্রুত বাসা বাঁধে শরীরে।
গ্রিন কফি বা গ্রিন টি
প্রতিদিনের রুটিনে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ পানীয় যুক্ত করুন। গ্রিন কফি এবং গ্রিন টি বার্ধক্যের লক্ষণগুলো দূর করে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতেও ভূমিকা রাখে। প্রতিদিন দুই কাপ চা-কফি পান করুন।
ব্যাকটেরিয়ায় ভয় নয়
স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া যুক্ত দই নিয়মিত খান। এটি হজম শক্তি বাড়াবে, ওজন কমিয়ে ফিট রাখবে। চুল-ত্বক সব হবে মনের মতো সুন্দর।
হাড় শক্তিশালী করুন
ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার এই বয়সে মাস্ট। বিশেষ করে নারীদের ৪০ এর পরেই হাড়ক্ষয় শুরু হতে থাকে। হাড় সুস্থ ও মজবুত রাখতে দুধ, দুগ্ধজাত পণ্য এবং মটরশুটি নিয়মিত খেতে হবে।
টাটকা সবজি-ফল
ডায়েটে প্রচুর পরিমাণে টাটকা সবজি ও ফল রাখুন। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, খনিজ থাকায় সুস্থতার জন্য সবজি ও ফলের কোনো বিকল্প নেই। বাদাম স্বাস্থ্যকর প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন এবং ফাইবারের বড় উৎস। মস্তিষ্ক ও স্বাস্থ্যের উন্নতি থেকে হৃদরোগের প্রতিরোধে নিয়মিত এক মুঠ বাদাম খান। প্রচুর পানি পন করুন। মাছ খেতে পারেন পছন্দমতো তবে মাংস খেতে হবে হিসাব করে। যাই খাবেন পরিমাণে হবে পরিমিত।
প্রতিদিন অন্তত সাত ঘণ্টার ঘুম দরকার। দুপুরে অন্তত ১৫-২০ মিনিটের হালকা ঘুম খুব উপকারী। এতে আয়ু বাড়ে। কয়েক বছর আগে ইউনিভার্সিটি অব এথেন্স ও হার্ভার্ডের স্কুল অব পাবলিক হেলথের একদল গবেষক দুপুরে সামান্য ঘুমান এমন ২৩ হাজার গ্রিক নাগরিকের ওপর দীর্ঘ ছয় বছর ধরে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে দেখেছেন, তাঁদের কারও হৃদরোগ, ক্যানসার বা স্ট্রোক হয়নি। তাঁদের সিদ্ধান্ত দুপুরের সামান্য ঘুম আপনার জীবন রক্ষা করতে পারে, আয়ু বাড়াতে পারে। মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ শত কাজের মধ্যেও প্রতিদিন দুপুরে ১৫ মিনিটের জন্য হলেও ঘুমিয়ে নেন। তাঁর বয়স এখন প্রায় ৯০।
সিগারেট পান একেবারে নিষেধ। ধূমপানে অভ্যস্ত ব্যক্তিদের ধূমপান ছাড়ার বছর দুয়েকের মধ্যে হৃদরোগের আশঙ্কা প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে, ধূমপানের সঙ্গে যুক্ত ক্যানসারের আশঙ্কা প্রতিবছর কমতে থাকে। ১৫ বছরের মধ্যে ধূমপানের সব ধরনের ক্ষতি দূর হয়ে যায়। সুতরাং আজই ধূমপান বাদ দিন।
কোনো সমস্যা না হলেও বছরে অন্তত একবার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো চেকআপ করিয়ে নিন।