যুক্তরাষ্ট্রকে আরেকবার প্রকাশ্য হুমকি দিলেই উত্তর কোরিয়ায় হামলা চালাবেন বলে চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পিয়ংইয়ংয়ের দিক থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া না এলেও ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছে তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র পরাশক্তিধর দেশ চীন। ট্রাম্পকে শিগগিরই উস্কানিমূলক কথা বলা বন্ধ করতে বলেছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। উত্তর কোরিয়ার প্রধান নেতা কিম জং উনকেও তিনি একই আহ্বান জানিয়েছেন। খবর বিবিসি, এএফপি ও ফক্স নিউজের।
গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চরম ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন যদি আর একবার প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়ার সাহস দেখান, তাহলে তাকে দ্রুতই এর চরম মূল্য দিতে হবে। এই আলটিমেটাম দেওয়ার আগে তিনি আরও বলেন, উত্তর কোরিয়ায় হামলার চিন্তা বাদ দেয়নি হোয়াইট হাউস। যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীও যেকোনো সময় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। ছুটিতে থাকা ট্রাম্প নিউজার্সির গলফ ক্লাব থেকে আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত এলাকা গুয়ামে কিছু হলে শিগগিরই উত্তর কোরিয়ায় এমন কিছু ঘটবে যা এর আগে বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করেনি। দেশটি শিগগিরই বিশাল বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে। গুয়ামের বাসিন্দারা উত্তর কোরিয়ার হুমকি থেকে নিরাপদ বলেও আশস্ত করার চেষ্টা করেন ট্রাম্প। দেশবাসীকে তার ওপর আস্থা রাখারও অনুরোধ জানান তিনি। এ সময় পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, তা আরও কঠোর হবে।
এর ঘণ্টাখানেক পরেই তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে টেলিফোন করেন। সে সময় তিনি অবশ্য শান্তিপূর্ণ সমাধানের ওপরেই জোর দেন। হোয়াইট হাউস পরে এক বিবৃতিতে জানায়, দুই নেতাই মনে করেন উত্তর কোরিয়াকে অবশ্য উস্কানিমূলক আচরণ থেকে সরে আসতে হবে। কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করার বিষয়েও তারা সহমত হন। এদিকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, টেলিফোন আলাপের সময় ট্রাম্পকেও উস্কানিমূলক কথাবার্তা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন শি জিনপিং। কিছুদিনের মধ্যেই গুয়ামে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাবে বলে সম্প্রতি উত্তর কোরিয়া হুমকি দেয়। এর পরই একের পর এক টুইটে হুঁশিয়ারি দিতে থাকেন ট্রাম্প। উত্তর কোরিয়াও ট্রাম্পের হুমকি-ধমকি নিয়ে তাচ্ছিল্য করতে ছাড়েনি। তিনি যুদ্ধের কথা মাথা থেকে আর তাড়াতে পারছেন বলে মশকরা করে পিয়ংইয়ং। যুক্তরাষ্ট্রকে পরমাণু যুদ্ধের জন্য উন্মাদ এক দেশ বলেও মন্তব্য করা হয়।
গুয়ামে হামলার হুমকির পর বেশ দুশ্চিন্তায় পড়ে রাশিয়াও। সংকট নিরসনে চীনের সঙ্গে একটি যৌথ পরিকল্পনা পেশ করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। উত্তর কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধ লেগে যাওয়ার আশঙ্কা ‘খুব বেশি’ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ওয়াশিংটন ও পিয়ংইয়ংয়ের হুমকি-পাল্টা হুমকিতে আমরা খুব উদ্বিগ্ন। জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, এর সামরিক কোনো সমাধান নেই।