উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ সপ্তাহে মিয়ানমার সফর করেছেন উত্তর কোরিয়া বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জোসেফ ইয়ুন। তখন তিনি ওয়াশিংটনের মানসিকতা সম্পর্কে ক্ষমতার মূলে থাকা অং সান সুচি ও সেনা প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং’কে জানিয়ে দিয়েছেন।
এর মধ্য দিয়ে উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র কতটা উদ্বিগ্ন তার প্রকাশ পেয়েছে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য উত্তর কোরিয়া সফর নিষিদ্ধ করা হয়েছে। চীনকে ব্যবহার করে উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করানোর চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার এ বিষয়টিতে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন, মিয়ানমারে সেনাবাহিনী কয়েক দশক ধরে ক্ষমতায়। সময়ে তারা উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক গাঢ় করেছে। সেই বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। এ বিষয়টিই জোরালো হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জোসেফ ইয়ুনের মিয়ানমার সফর। মিয়ানমারে এখন বেসামরিক নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায়। তারা উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক থাকার কথা অস্বীকার করলেও যুক্তরাষ্ট্র তাদের ওপর চাপ দিচ্ছে। ওই কর্মকর্তা বলেছেন, উত্তর কোরিয়া আঞ্চলিক ও বিশ্বের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে।
এ জন্য উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক, বিশেষ করে সামরিক সম্পর্ক থাকলে সে বিষয়ে সতর্ক বার্তা দেয়া হচ্ছে। তবে মিয়ানমার ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে কি ধরনের সামরিক সহযোগিতা অব্যাহত আছে সে বিষয়ে তিনি পরিষ্কার করে কিছু বলেন নি। এ বিষয়ে ওয়াশিংটনে অবস্থিত মিয়ানমারের দূতাবাস থেকেও কোনো মন্তব্য করা হয় নি। তবে মিয়ানমার দাবি করে, ২০১১ সালে মিয়ানমারে বেসামরিক সরকার ক্ষমতায় আসার আগে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সব রকম অস্ত্র কেনাবেচা ও অন্যান্য সামরিক সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে। এর আগে উত্তর কোরিয়ায় তৈরি অস্ত্র মিয়ানমারের সেনারা আমদানি করেছে বলে বিশ্বাস করা হয়। বলা হয়, উত্তর কোরিয়ার ব্যক্তিরা কাজ করেছেন মিয়ানমারে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেছেন, মিয়ানমারকে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। যদি তারা তা না করে তাহলে উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে মিয়ানমারের ওপর আরো অবরোধ দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।
এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের সঙ্গে কূটনৈতিক উপায়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অঞ্চলে চীন যাতে আধিপত্য বিস্তার না করতে পারে সে জন্যও তারা মিয়ানমারকে ব্যবহার করতে চায়। উল্লেখ্য, গত সোমবার মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন পৌঁছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ইয়ুন। তখন তার সঙ্গে আলোচনায় মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব কাইওয়অ জেয়া জানিয়ে দিয়েছেন, পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে আর কোনো সামরিক সম্পর্ক নেই তাদের। এক্ষেত্রে জাতিসংঘের রেজুলেশন মেনে চলছেন তারা।