ডিএমপি নিউজঃ সাদা চোখে মনে হবে কোন ব্যাংকের সাধারণ একটি মাস্টার ক্রেডিট কার্ড। আসলে মাস্টার কার্ডের প্রলেপ দেয়া একটি বিশেষ ইলেকট্রনিক ডিভাইস যার ভিতরে থাকা মোবাইল সিমের মাধ্যমে বাইরে থেকে আসা কল রিসিভ করা যায়। ডিভাইসটির সাথে থাকে একটি ছোট্ট ইয়ারপিস যা কানে লাগিয়ে ঐ ইলেকট্রনিক ডিভাইসে আসা কল রিসিভ করে কথা বলা যায়। এ ডিভাইস ব্যবহার করে ব্যাংক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষার কেন্দ্রেই পাওয়া যেত প্রশ্নপত্রের সমাধান।
আরেকটু খুলে বলা যাক। প্রথমে নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে এই অপকর্মকারী চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন পরীক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করে চুক্তি করত। চুক্তিকৃত অর্থের পরিমাণ ক্ষেত্র বিশেষে কয়েক হাজার টাকা থেকে লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতো। নির্দিষ্ট পরীক্ষার দিনে চুক্তিবদ্ধ পরীক্ষার্থীদের বাহুতে বিশেষ কায়দায় মাস্টারকার্ডসদৃশ ইলেকট্রনিক ডিভাইসটি স্থাপন করত। এরপর কানে লাগিয়ে দিত অতিক্ষুদ্র ইয়ারপিস । যার মাধ্যমে পরীক্ষার্থী কেবলমাত্র কল রিসিভ করতে পারবে। কোন কল দিতে পারবে না। পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে ঢোকার পর বাইরে থেকে ডিভাইসটিতে ফোন করা হত। পরীক্ষার্থী কৌশলে সেই কল রিসিভ করে প্রশ্ন জানিয়ে দেয় বাইরে থাকা এ চক্রের সদস্যদের। এরপর বাইরে থেকে ঐ প্রশ্নের দ্রুত উত্তর বের করে ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হত। নিয়োগ পরীক্ষায় এধরনের অপকর্মকারী চক্রের ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি’র গোয়েন্দা উত্তর বিভাগ। ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিং-এ আজ এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানানো হয়।
ব্রিফিং-এ বলা হয়, গ্রেফতারকৃত ১০ জনের মধ্যে তিন জন বিভিন্ন ব্যাংকের অফিসার পদে কর্মরত আছে। এ সময় তাদের হেফাজত হতে ক্ষুদ্র ব্যাটারী ও ইয়ারপিসসহ ১৩ টি বিশেষ ধরণের ইলেকট্রনিক ডিভাইস উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও পলাতক ব্যক্তি ও যারা ইতোপূর্বে এ ডিভাইসের মাধ্যমে অবৈধ সুবিধা গ্রহণ করেছে তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যহত রয়েছে।
পরীক্ষাকেন্দ্রে দায়িত্বরত পরিদর্শকরা যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন ও নজরদারি করলে এ ধরণের অপকর্মরোধ করা সম্ভব বলেও জানিয়েছে ডিএমপি।