সংগীত জগতে পরপর ধাক্কা। মাত্র কয়েকদিন আগেই প্রাণ হারিয়েছেন লতা মঙ্গেশকর। দীর্ঘ অসুস্থতার পর মঙ্গলবারই খসে গিয়েছে সন্ধ্যাতারা। ইহলোক ছেড়ে চলে গিয়েছেন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। আর তার ঠিক পরেরদিনই বাপ্পি লাহিড়ীর (Bappi Lahiri) মৃত্যুর খবরে ঘুম ভেঙেছে প্রায় সকলের। মুম্বাইয়ের হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ‘ডিস্কো কিং’।
চিকিৎসকদের মতে, অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণে মাত্র ৬৯ বছর বয়সেই প্রাণ গেল তাঁর। বিখ্যাত সংগীত শিল্পী তথা সুরকারের মৃত্যুর পর সকলের মনে এই রোগ সম্পর্কে কৌতুহল জন্মেছে। কী এই অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া? জেনে নেওয়া যাক অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
বিভিন্ন ধরনের স্লিপ অ্যাপনিয়া রয়েছে। তবে ঘুম সম্পর্কিত শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত রোগই হল অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (Obstructive Sleep Apnea)। এই রোগে যাঁরা আক্রান্ত হন, ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁদের শ্বাস নিতে সমস্যা হয়। কারণ, ঘুমের সময় তাঁদের শ্বাসপ্রশ্বাস অনিয়মিত হয়ে যায়। তাই দমবন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। চিকিৎসকদের মতে, যাঁরা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের গলার পেশি সাধারণ মানুষের তুলনায় বেশি শিথিল হয়। গলার পেশি আল জিহ্বা, জিভ এবং টনসিলের মতো অংশগুলিকে ধরে রাখে। অথচ গলার পেশি বেশি শিথিল হওয়ায় শ্বাস নেওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। তার ফলে ঘুমের মধ্যে শ্বাস নিতে সমস্যা তৈরি হয়। মাত্র ১০ সেকেন্ড এই অবস্থা জারি থাকলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
কোন কোন উপসর্গ দেখে বুঝবেন কেউ অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় ভুগছেন?
♦ ঘুমের মধ্যে জোরে জোরে নাক ডাকা
♦ একটুতেই হাঁফিয়ে যাওয়া
♦ দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার অনুভূতি
♦ ঘুমন্ত অবস্থায় শ্বাস নিতে সমস্যা
♦ বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া
♦ অতিরিক্ত ক্লান্তিভাব
♦ সব কিছু ভুলে যাওয়া
♦ ঘুম থেকে ওঠার পরই মাথা যন্ত্রণা
দৈনন্দিন জীবনযাপনেও অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় প্রভাব পড়ে।
⇒ দীর্ঘদিন ধরে এই রোগে ভুগলে যৌনচাহিদা কমে
⇒ মানসিক অবসাদেও ভোগেন কেউ কেউ
⇒ শিশুদের প্রতি অমানবিক আচরণ করতেও দেখা যায় অনেককে
⇒ যে কোনও কাজে দক্ষতা হ্রাস পায়
অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া রুখতে প্রয়োজন:
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে
পর্যাপ্ত ঘুম হওয়া আবশ্যক
ইতিবাচক ভাবনাচিন্তা করতে হবে
কোনও কিছুতেই সমস্যার সমাধান না হলে অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্তও নেন। তাই সামান্য উপসর্গ দেখলেই চিকিৎসকের কাছে যান। পরামর্শ নিন।